বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়ায় কোনো রকম বাছাই পর্ব না খেলে বিশ্বকাপ খেলছে কাতার। কিন্তু বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা দলগুলো কতটা সামর্থ রাখে সেটা টের পেল তারা প্রথম ম্যাচেই। এমনিতেই লাতিন ফুটবলের সাথে এশিয়ান ফুটবলের ফারাকটা অনেক। আর সেটা যেন আরো পরিষ্কার করে দেখিয়ে দিল ইকুয়েডর। দুই দিন আগে এক প্রস্তুতি ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল ইকুয়েডরের পাশের দেশ আর্জেন্টিনা। ইকুয়েডর ততটা দেখাতে না পারলেও শক্তি আর সামর্থের ফারাকটা বেশ ভালই বুঝিয়ে দিয়েছে। বিশ্বকাপের এবারের আসরের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ২-০ গোলে পরাজিত করে দারুনভাবে শুরু করল ইকুয়েডর।
গতি আর টেকনিক কোনোদিক দিয়েই ইকুয়েডরকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি স্বাগতিক কাতার। তাইতো প্রথমার্ধেই দুই গোলে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। আর দুটি গোলই করেন ভ্যালেন্সিয়া। আর এই দুই গোল করার মধ্য দিয়ে ৮৮ বছরের পুরানো এক রেকর্ডে ভাগ বসালেন এই স্ট্রাইকার। ১৯৩৪ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন এঞ্জেলো শিয়াভিও। আর এবারের উদ্বোধনী ম্যাচে সেটা করলেন ভ্যালেন্সিয়া। শুধু তাই নয়, প্রথমার্ধে ৬৮ শতাংশ বল নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল ইকুয়েডর। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে তাদের আধিপত্য কিছুটা কমে। কাতার সমান তালে লড়াই করার চেষ্টা করে।
কিন্তু বারবার ইকুয়েডরের ফুটবলারদের গতির কাছে হার মানছিল। নিজেদের অর্ধ সুরক্ষিত রাখার চেষ্টার পাশপাশি আক্রমনে যাওয়ারও চেষ্টা করে। কিন্তু সফল হতে পারেনি স্বাগতিকরা। খেলার ৮৫ মিনিটে দারুন এক সুযোগ পেয়েছিল কাতার। নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা পাস ধরে দারুন এক শট নিয়েছিলেন মুনতারি। কিন্তু তার সে শট ক্রসবারে হাওয়া লাগিয়ে চলে যায় বাইরে। ফলে ব্যবধান কমানো সম্ভব হয়নি স্বাগতিকদের। শেষ দিকে বার কয়েক আক্রমন করেও আর গোল পায়নি ইকুয়েডর ফলে ২-০ গোলে জয় দিয়ে দারুনভাবে বিশ্বকাপ শুরু করল ইকুয়েডর।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল ইকুয়েডরের দাপট। একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে তারা। আর সে আক্রমণের ফলটা খেলার তিন মিনিটেই পেয়ে গিয়েছিল ইকুয়েডর। একটি ফ্রি কিক থেকে উড়ে আসা বলে দারুন এক হেডে জালে পাঠিয়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া। কিন্তু ভিআর সিস্টেমের সহায়তা নিলে দেখা ভ্যালেন্সিয়ার এক সতীর্থ অফসাইডে ছিলেন। ফলে গোলটি বাতিল করা হয়। তবে তাদের গোল পেতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৬ মিনিটেই ইকুয়েডরকে এগিয়ে দেন সেই ভ্যালেন্সিয়া। নিজেদের ডিবঙে ভ্যালেন্সিয়াকে ফাউল করে কাতারের গোল রক্ষক সাদ আল সায়েব। হলুদ কার্ড দেখেন সাদ। সে সাথে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি।
সে পেনাল্টি থেকে ভ্যালেন্সিয়া গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম গোল এটি। আর গোলটি আসল পেনাল্টি থেকে। এক গোলে এগিেয় যাওয়ার পর আক্রমণের ধারা বাড়ায় ইকুয়েডর। কিন্তু গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারছিলনা। ৩১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন সেই ভ্যালেন্সিয়া। ডান প্রান্ত থেকে এঞ্জেলিনো প্রেসিয়াডো দারুন এক ক্রস করেণ। ডিবঙে ফাঁকায় দাড়ানো ভ্যালেন্সিয়ার নিঁখুত হেড জড়ায় জালে। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। দ্বিতীয়ার্ধে কাতারও চেষ্টা করেছে পাল্টা আক্রমনের। কিন্তু তাদের পক্ষেও সেটা সম্ভব হয়নি। ফলে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে হলো স্বাগতিকদের।