প্রথম দিনেই রান এবং দর্শক দুটোই দেখল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বরাবরই বিপিএল জমে উঠে চট্টগ্রামে এসে। ঢাকায় কখনো থাকে দর্শক খরা আবার কখনো থাকে রান খরা। যদিও এবারে বিপিএলের ঢাকা পর্বে বেশ ভালই রান হয়েছে। তবে দর্শক তেমন হয়নি। তাই চট্টগ্রাম পর্বের দিকেই তাকিয়ে ছিল সবাই। এমনিতেই চট্টগ্রামের উইকেটে বরাবরই রান হয়ে থাকে। তাই রানের ব্যাপারে তেমন কারো কোন সংশয় ছিলনা। একইভাবে দর্শকরাও দারুণভাবে উপভোগ করে বিপিএল চট্টগ্রামে। এবারের আসরে প্রথম দিনেই যেন মিলে গেল দুটোই। বিশেষ করে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনেই রান এবং দর্শক দুটোই একসাথে দেখল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম।

গতকাল বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নেমেছিল চট্টগ্রামের দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তাই দর্শকরা যে আসবে সেটা অনুমিতই ছিল। তার উপর গতকাল ছিল শুক্রবার। সপ্তাহিক ছুটির দিন বলে দর্শকরা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারী ভরিয়ে দিয়েছিল। শুক্রবার বলে ম্যাচের শিডিউলে কিছুটা পরিবর্তণ থাকে। এমনিতেই দিনের প্রথম ম্যাচটা শুরু হয় দুপুর দেড়টায়। শুক্রবারে সেটা শুরু হয় দুপুর দুইটায়। আর সে সুযোগে দর্শকরা একেবারে জুমার নামাজ এবং দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাঠে আসতে পেরেছে।

গতকালের দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং ফরচুন বরিশাল। যদিও জুমার আগে থেকেই দর্শকরা আসতে থাকে মাঠে। তবে জুমার নামাজের পর স্টেডিয়ামের গ্যালারী ক্রমশ ভরে যায়। সময় যতই গড়িয়েছে ততই বেড়েছে দর্শকদের উপস্থিতি। এক পর্যায়ে গ্যালারীর বেশিরভাগ অংশই পুরন হয়ে যায়। যদিও চট্টগ্রামের জয় দেখতে আসা দর্শকদের আশা পূরণ হয়নি। তবে ম্যাচটা দারুণ উপভোগ করেছে দর্শকরা। কারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে জিনিসটা প্রত্যাশা করে দর্শকরা সে রান যে উঠেছে প্রচুর। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এবারের বিপিএলের প্রথম রাউন্ডের ৮ ম্যাচের সবশেষটিতে সিলেট স্ট্রাইকার্স করেছিল ২০১ রান।

তবে গতকাল চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচেই প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০২ রান করে ফেলে বরিশাল। যা এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় দুইশর বেশি দলীয় স্কোর। জবাবটাও একেবারে মন্দ দেয়নি চট্টগ্রাম। যদিও ম্যাচটি তারা ২৬ রানে হেরেছে। তারপরও জিয়াউর রহমান, ওসমান খান এবং আফিফদের ব্যাটিংটা বেশ ভালই উপভোগ করেছে দর্শকরা। যদিও গতকালের প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন বরিশালের পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান ইফতেখার আহমেদ। তার জবাব হতে পারেননি চট্টগ্রামের কেউই। তাইতো ম্যাচটাতে হারতে হয়েছে তাদের। তবে দর্শকরা দারুণভাবে উপভোগ করেছে এই ম্যাচটি। অবশ্য চট্টগ্রাম ম্যাচটা জিততে পারলে দর্শকদের আনন্দটা দ্বিগুণ হতো। গতকালের দুটি ম্যাচে চট্টগ্রামের তিনজন ক্রিকেটার খেলেছে দুই দলের হয়ে।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে ছিলেন ইরফান শুক্কুর। আর খুলনা টাইগার্সে ছিলেন তামিম ইকবাল এবং ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি। চট্টগ্রামের দর্শকদের মন ভরাতে পারেনি চট্টগ্রামের ক্রিকেটাররা। অবশ্য চট্টগ্রামের হেরে যাওয়া ম্যাচটাতে ব্যাট করার সুযোগ পাননি ইরফান শুক্কুর। তবে খুলনার হয়ে ব্যাটিং ওপেন করতে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু হতাশ করেছেন তিনি। তামিম যখন ব্যাট করতে নামেন তখন জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারী কানায় কানায় পূর্ণ। কিন্তু তারা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তামিম ফিরলেন সাঝঘরে। মাত্র ৪ বল খেলে এক রান করেছেন দেশের সেরা এই ওপেনার।

তখনো দর্শকরা আশায় বুক বেধে ছিল। কারন চট্টগ্রামের আরেকজন ছেলে যে তখনো উইকেটে। তিনি ইয়াসির আলি রাব্বি। কিন্তু তিনিও পারেননি দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে। যদিও দলের মান বাঁচানো ২২ বলে ২৫ রান করেছেন তিনি। মুলত তার আউটের পরেই স্টেডিয়ামের গ্যালারী যেন ঝিমিয়ে পড়ে। দর্শকরা মাঠ ছাড়তে থাকে। প্রথম ম্যাচের রান বন্যার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও হতে পারতো। কিন্তু খুলনার ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং তা হতে দেয়নি। তবে চট্টগ্রামের উইকেট যেন আভাস দিয়ে রাখল এই মাঠে রান হবে। আর দর্শকরা তা উপভোগ করতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিভাগীয় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন আজ
পরবর্তী নিবন্ধখরচ কমাতে সামরিক বাহিনীর সদস্য ছাঁটছে শ্রীলঙ্কা