জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভাল কিছু করার ঘোষণা দিয়ে সিলেট টেস্টে খেলতে নামা বাংলাদেশ প্রথম দিনেই হতশ্রী। ব্যাট কিংবা বল, দুই বিভাগেই রাজত্ব করেছে জিম্বাবুয়ে। স্বাগতিক দলের ব্যাটারদের হতাশার সাথে গা ভাসিয়ে দিলেন বোলাররা। জিম্বাবুয়ের বোলাররা যেখানে ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের উপর সেখানে বাংলাদেশের বোলাররা যেন বল ফেরার জায়গাও পাচ্ছেন না। তাই বলা যায় সিলেট টেস্টের প্রথম দিনেই ম্যাচের লাগাম জিম্বাবুয়ের হাতে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের বোলিংকে মোটেও সামলাতে পারেনি টাইগাররা। অলআউট হয়েছে ১৯১ রানে। এরপর ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১৪.১ ওভার। এর মধ্যে একটি উইকেটও নিতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান। এখনও ১২৪ রান পিছিয়ে তারা। তবে প্রথমদিন যেভাবে খেলেছে, তাতে সফরকারী জিম্বাবুয়েই অনেকটা এগিয়ে থাকলো। মুমিনুল হক ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই ঠিকমত দাঁড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে বোলারদের সামনে। ১০৫ বল খেলে ৫৬ রান করেন মুমিনুল। এছাড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। উইকেট রক্ষক জাকের আলি অনিক করলেন ২৮ রান।
প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার ব্যর্থ হলেন এ ম্যাচেও। ৩১ রানের মাথায় ফিরলেন সাদমান ইসলাম। ২৩ বলে ১২ রান করে ফিরেন সাদমান। নিজের পরের ওভারে বাংলাদেশের অপর ওপেনারকেও ফেরান ভিক্টর নিয়াউচি। ৩৫ বলে ১৪ রান করে ফিরেন মাহমুদুল হাসান জয়। তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন মোমিনুল হক এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বেশ ভালই এগুচ্ছিলেন দুজন। ৫২ রান যোগ করে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছিলেন দুজন। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং ধ্বস। নিয়াউচির জোড়া আঘাতের পর এবার মুজরাবানির আঘাত। তার প্রথম শিকার শান্ত। ৬৯ বলে ৪০ রান করে মাদবিরির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন শান্ত। ভাঙ্গে মোমিনুলের সাথে তার ৬৬ রানের জুটি। দলের সবচাইতে অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক ফিরেন ৪ রান করে মাসাকাদজার প্রথম শিকার হয়ে। এরপর মুজরাবানি এবং মাসাকাদজার সম্মিলীত আক্রমণে একের পর এক সাঝঘরে ফিরতে থাকে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দলকে ১৩৬ রানে রেখে মোমিনুল ফিরেন ১০৫ বলে ৫৬ রান করে। তাকে ফেরান মাসাকাদজা। এরপর জাকের আলি কিচুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অপরপ্রান্তে তাকে কেউ সঙ্গ দিতে না পারায় ২৮ রান করে ফিরেন তিনি। শেষ দিকে হাসান মাহমুদের ১৯ রানের কল্যানে ১৯১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। বাংলাদেশের ব্যাটারদের আউট হওয়ার ধরন ছিল বেশ দৃষ্টিকটু। কত দ্রুত উইকেট হারিয়ে আসতে পারে সে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিল যেন তারা। টেস্ট খেলতে গিয়েছিলো টি–টোয়েন্টি স্টাইলে। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মাজরাবানি এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ২টি করে উইকেট নিয়েছেণ মাদবিরে এবং নিয়াউচি।
বাংলাদেশকে কম রানে বেধে ফেলার পর ব্যাট করতে নেমে খুব ধীরে–সুস্থে নিজেদের জুটি তৈরি করছে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট এবং বেন কারান। ১৪.১ ওভার ব্যাট করে ৬৭ রান তুলেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে। রান তোলার হারও ভালো, ৪.৭২ করে। অথচ উইকেটে যেন মাটি কামড়ে পড়ে আছে তারা। বেনেট ছিলেন মারমুখি। তিনি ৩৭ বলে ৪০ রান করেন ৬টি চারের সাহায্যে। বেন কারান ব্যাট করছেন ১৭ রান নিয়ে। তিনি ৪৯ বলের ইনিংসে ২টি চার মেরেছেন। বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা কিংবা খালেদ আহমেদের মত পেসার এবং মেহেদী হাসান মিরাজের মত স্পিনাররা কোনো ধাক্কাই লাগাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে শিবিরে। উইকেট নেওয়ার মত কোন সুযোগই সৃষ্টি করতে পারেনি। ফলে হতাশায় প্রথম দিনটা শেষ করতে হয় বাংলাদেশকে।