আমি ভালোবাসি আমার দেশকে, আমি প্রত্যেকদিন দেখতে চাই সুন্দর বাংলাদেশকে, আর এ জন্য শিশু থেকেই প্রত্যেক পিতা–মাতা তাকে স্থিরতা ও অধ্যাবসায় এর মধ্যে অভ্যস্ত করে তোলা জরুরি। তাদের মস্তিকে সত্যিকার দেশপ্রেম জাগ্রত করা উচিত। নিজের দেশকে ভালোবাসা শুধু ভালো কথা বলা নয়, দেশের উন্নয়ন, সংস্কৃতি রক্ষা ও নাগরিক দায়বদ্ধতা পালন করাও দেশের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসার পরিচায়ক। দেশাত্মবোধ ও স্বদেশের প্রতি মমতা অনেক অন্যায় ও অপরাধ প্রবণতা থেকে মানুষকে বিরত রাখে। তাই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধন করতে হলে অবশ্যই দেশের প্রতিটি নাগরিকের অন্তরে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে। স্বদেশের প্রতি অনুগত থেকে জাতি–ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে দেশমাতৃকাকে ভালোবাসা সবার ঈমানি দায়িত্ব ও পবিত্র কর্তব্য।
স্বদেশ প্রেম হলো দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের মানসিকতা। এটি মানুষের আত্মপরিচয়ের ভিত্তি গড়ে তোলে এবং জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রকৃত স্বদেশ প্রেম কোনো সংকীর্ণ মতবাদে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত এক মহৎ অনুভূতি। ইতিহাসে বহু দেশপ্রেমিক তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির জন্য। তবে অন্ধ দেশপ্রেম জাতিগত সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে, তাই সত্যিকারের দেশপ্রেম হওয়া উচিত ন্যায় ও নৈতিকতার ভিত্তিতে পরিচালিত। স্বদেশ প্রেম ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির মূল প্রেরণা। নিজের দেশকে ভালোবাসা মানে দেশকে সম্মান দেওয়া, তার সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্যে গর্ব করা এবং দেশের উন্নতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। দেশের প্রতি ভালোবাসার একটি মৌলিক দায়িত্ব হলো দেশের আইন ও নিয়ম কানুন মেনে চলা, সরকারি সম্পদের সুরক্ষা করা এবং পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা ও সম্মান প্রদর্শন করা।
দেশকে ভালোবাসা ও সম্মানের মূল্যবোধ ব্যক্তি জীবনের আচরণগত বৈপরীত্য দূর করতে সক্ষম। সমাজে যে সব সংঘাত ঘটছে একমাত্র মূল্যবোধ অবক্ষয়ের কারণে, নৈতিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ করে এসব সংঘাত এড়ানো সম্ভব। তবে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ সহজ; সমাজ রাষ্ট্রের নিশ্চিত অধঃপতন ঠেকাতে তাই– নৈতিক মূল্যবোধ এর অবক্ষয় রোধ করা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তৈরি থাকা উচিত এমন মনোভাব যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করে, যেখানে নাগরিকরা নিজের স্বার্থের পরিবর্তে দেশের সামগ্রিক কল্যাণের কথা ভাবেন। নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা, সামাজিক সুন্দরায়ন, এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হওয়াও নিজ দেশের প্রতি ভালোবাসার অংশ।
সুতরাং, নিজের দেশকে ভালোবাসার দায়িত্ব হলো শুধু আবেগগত নয়, বরং সক্রিয় ও স্থায়ী কর্মের মাধ্যমে দেশের উন্নতি ও মানবিক ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটানো। এই দায়িত্ব সচেতন নাগরিক হিসেবে সকলের পালন করা উচিত।