প্রতিবন্ধীদের আশার আলো

জালাল আহমেদ অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৮ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ড পৌরসদরের নামার বাজার এলাকার বিশাল বড়ুয়া (১৫) একজন বাক প্রতিবন্ধী। কথা বলতে পারে না সে। তাই অভিভাবকরা কোন স্কুলে ভর্তি করাননি। কিন্তু সে স্কুলে যেতে চায়। গ্রামের অন্য ছেলে মেয়েদের মত পড়ালেখা করে বড় হতে চায়। যদিও তাকে কোথায় পড়াবেন তা ভেবেই দিশেহারা ছিলেন অভিভাবকরা। ঠিক তেমনি সময়ে সুমনের এই ইচ্ছে পূরণের সুযোগ এনে দেয় পাশের গ্রামে স্থাপিত হওয়া জালাল আহমেদ অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের শিবপুর গ্রামের জালাল আহমেদের ছেলে পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার আলী মাসুদ শামীম নিজ বাড়িতে পৈত্রিক ২০ শতক জায়গার উপর এই প্রতিবন্ধী স্কুলটি স্থাপন করেন। বর্তমানে বিশাল বড়ুয়া এ বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়ছে। শুধু বিশাল নয়, তার মত প্রতিবন্ধী আরো অসংখ্য প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে এই বিদ্যালয়ে। এসব শিক্ষার্থীদের কেউ শারীরিক, কেউ মানসিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু সকলকে সমান সুযোগ দিয়ে পড়ানো হচ্ছে এখানে।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সীতাকুণ্ড পৌরসভার কাউন্সিলর জুলফিকার আলী মাসুদ শামীম বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক বিদ্যালয় আছে। কিন্তু শুধুমাত্র প্রতিবন্ধীদের জন্য কোন বিদ্যালয় ছিল না। রান ডেভেলপমেন্ট নামক একটি উন্নয়ন সংস্থা এ বিষয়টি আমার নজরে আনার পর আমি একটি প্রতিবন্ধী স্কুলের গুরুত্ব উপলব্ধি করে পরিবারের লোকজনের সাথে বসে নিজ বাড়িতেই ২০ শতক জায়গা দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করি। বর্তমানে এখানে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এখানে মোট ১৪৬ জন শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষক আছেন ১৩ জন, পিয়ন ১ জন, ঝাড়ুদার ২ জন, ক্লার্ক ২ জন এবং ২ জন নাইট গার্ড আছেন। শিক্ষকরা প্রায় সবাই প্রতিবন্ধীদের সেবার উদ্দেশ্যে বিনামূল্যে শ্রম দেন। তাদেরকে শুধুমাত্র যাতায়াত ভাড়া দেওয়া হয়। স্কুলটি শিবপুর এলাকায় স্থাপিত হলেও পৌরসভা, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন এলাকার প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েরা এখানে পড়ছে। তাদের আনা নেওয়ার জন্য দুটি সিএনজি টেক্সি আছে। সব মিলিয়ে প্রতিমাসে এই স্কুলের ব্যায় ৭০-৭৫ হাজার টাকা। শামীম নিজে এই টাকা ব্যয় করছেন শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ২লাখ টাকা অনুদান ঘোষণা করেছে। এছাড়া শুরু থেকে স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব দিদারুল আলম অর্থসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছেন। এছাড়া তিনি এটি এমপিও ভুক্ত করার জন্য ডিও লেটারও দিয়েছেন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টিতে আমি গেছি। এটি দরকার ছিল। আমরা শিক্ষার্থীদের বই-পুস্তকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছিপাতলী মাদরাসায় আলা হযরত কনফারেন্স
পরবর্তী নিবন্ধচকবাজারে শাহাদাতের সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ