প্রতিপক্ষের হামলায় আহত তাঁতীদল নেতা নুরুল আলম মারা গেছেন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২৪ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত নগর তাঁতীদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল আলম (৫২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল শনিবার ভোরে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে তার উপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ১ নভেম্বর তার স্ত্রী তাজনাহার বেগম বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় এজাহার দেন। এতে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়।

নিহত নুরুল আলম নগরের গোসাইলডাঙ্গায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার বাড়ি নোয়াখালীর কবিরহাট। তিনি আগ্রাবাদ অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া বাস্তুহারা ইউনিট বিএনপির সভাপতি এবং ডবলমুরিং থানা তাঁতীদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নুরুল আলমকে হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবি করে গতকাল বাস্তুহারা কলোনি এলাকায় মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।

ডবলমুরিং থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ আজাদীকে বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মামলার প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, মা ও শিশু হাসপাতালের মেইন গেটের সামনে নুরুল আলমের একটি ভাতের হোটেল আছে। অদূরে সিটি কর্পোরেশনের একটি জায়গা আছে যেখানে বিভিন্ন গাড়ির মালামাল রাখা হয়। ঘটনার দিন বিকেলে ৪টার দিকে মো. আলমগীর নামে এক লোক সেখান থেকে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেন নুরুল আলম। এর জের ধরে সন্ধ্যায় আরশগীরসহ অন্যান্য আসামিরা এসে তার উপর হামলা করে। এসময় তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মা ও শিশু হাসপাতাল ও সেখান থেকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, প্রথমে ভাতের হোটেল চালালেও পরে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায় যোগ দেন নুরুল আলম। এছাড়া ওই এলাকায় ফুটপাতের ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। সব মিলিয়ে বাস্তুহারা কলোনিসহ আশেপাশে তার প্রভাব ও আধিপত্য ছিল। সম্প্রতি আধিপত্য নিয়ে বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী কিছু নেতাকর্মীর সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। এ বিরোধ থেকেই তার উপর হামলা হয়েছে।

এদিকে নুরুল আলমের মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গতকাল বেলা ১১টায় তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় হৃদয় বিদারক দৃশ্য। বুক ফাঁটা আর্তনাদ করছেন ভাইহারা তার ৬ বোন। দুই দিন আগেও যাদের সুখদুঃখের খবর নিয়েছিলেন ভাই নুরুল আলম। বোনের হাতে খেয়েছেন ভাতও।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার এক বোন আজাদীকে বলেন, সকালে দেখেছি ভালো মানুষ কিন্তু রাতে লাশ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নুরুল আলম। তার দাবি, দোকানের মালামাল লুটে বাঁধা দেন তার ভাই। এতে রাতের আঁধারে মাথায় আঘাত করেন ২০ জন আওয়ামী সন্ত্রাস। তবে তারা নব্য বিএনপি সাজার চেষ্টা করছে।

এসময় স্থানীয় লোকজন বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে নুরুল আলমকে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা। তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা।

নিহত নুরুল আলমের দুই ছেলেদুই মেয়ে। তার ছেলে মোরশেদুল আলম শিপন বলেন, বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেন্ট মার্টিন লিজ দেয়ার বিষয়টি গুজব : প্রেস উইং
পরবর্তী নিবন্ধডেইরি ফার্মের আড়ালে কাটা হচ্ছে পাহাড়