প্রতিদিন দুইবার কীটনাশক ছিটানোর নির্দেশ মেয়রের

নগরে মশার উপদ্রব ৭ কর্মদিবস অনুপস্থিত থাকলে বরখাস্ত

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৯ মার্চ, ২০২৫ at ৪:১৯ পূর্বাহ্ণ

নগরে দীর্ঘদিন ধরে মশার উপদ্রব বাড়লেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মশক নিধন কার্যক্রমে গতি ছিল না বলে অভিযোগ আছে নগরবাসীর। রাতদিন মশার কামড়ে নগরবাসী অতিষ্ঠ থাকলেও চুপ ছিল চসিক। বিষয়টি নিয়ে গত রোববার আজাদীতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে চসিক। গতকাল মঙ্গলবার পরিচ্ছন্ন বিভাগের সভা ডেকে মশার উপদ্রব থেকে জনগণকে বাঁচাতে প্রতিদিন দুইবার কীটনাশক ছিটানোর নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এমনকি মশা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক ক্রয়, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও নতুন কৌশল খুঁজে বের করতেও পরিচ্ছন্ন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেউ ৭ কর্মদিবস অনুপস্থিত থাকলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তেরও ঘোষণা দেন। সভায় ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, মশার ওষুধের পূর্বের ঘাটতি মেটাতে পর্যাপ্ত ওষুধ সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে মশার প্রাদুর্ভাবের কারণে জনগণকে ডেঙ্গু ও কিউলেঙ থেকে রক্ষায় প্রতিদিন দুইবার মশা নিয়ন্ত্রণের ওষুধ ছিটানো নিশ্চিত করতে হবে।

মেয়র জানান, তিনি নিজে মাঠ পর্যায়ে মশার ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রতিটি ওয়ার্ড থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অভিযান চালানোর ফলে নগরীর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে উন্নতি লক্ষ করা গেলেও আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও মশা নিয়ন্ত্রণে ওয়ার্ডভিত্তিক মনিটরিং অব্যাহত থাকবে বলে জানান। তিনি বলেন, ১০০ পিস ফগার মেশিন ও ১২০ পিস স্প্রে মেশিন কেনা হয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংক সিটি কর্পোরেশনকে ডেঙ্গু ও মশা নিয়ন্ত্রণে অত্যাধুনিক ফগার মেশিন দান করেছে। আরো কিছু প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। জনগণকে মশার কামড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষায় সবাইকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

শাহাদাত বলেন, আপনারা জনসচেতনতা বৃদ্ধি করুন। আমিও চেষ্টা করছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন জায়গায় নালা, ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখা, লিফলেট বিতরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। অন্যথায় আমরা জনগণের কোনো উপকারে আসতে পারব না। মশার প্রজনন রোধে কোথাও ডাবের খোসা, বালতি, নির্মাণ সামগ্রী উন্মুক্ত রাখা যাবে না। এতে পানি জমে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। বাসায় টব, বালতিতে দুইতিন দিন পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। খোলা জায়গায় টব রেখে পানি জমা করা যাবে না। কারণ ওখানে পানি জমলেই মশার লার্ভা জন্মাবে।

মেয়র সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের জন্য ঠিকাদার কর্তৃক নির্মিত অস্থায়ী বাঁধের কারণে কোথাও হঠাৎ করে পানি উঠে রাস্তা ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটলে অবহিত করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে নালাখাল পরিষ্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ব্যাকহোলোডার গাড়ি কেনা হয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪০ হাজার বিন বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরমজানে রক্তাক্ত গাজা
পরবর্তী নিবন্ধআগামী মাস থেকে ডেঙ্গু বাড়ার শঙ্কা