আমাদের দেশের অধিকাংশ নারী আর্থিক টানাপোড়নে ভোগেন। শিক্ষিত অশিক্ষিত এই দুইয়ের মধ্যেই দেখতে পাওয়া যায়। এর প্রধান কারণ নারীরা স্বাবলম্বী হতে গেলে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পারিবারিক সাপোর্ট। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিবার থেকে সেটা নারীরা পায় না। যেটাই করতে চায় – সেটাতেই বাধা! সে হোক বাবা, ভাই, স্বামী। প্রত্যেকেই ভাবে কী দরকার তার ঘরের মেয়ে মানুষটি বাইরে কাজ করবে! অনেকটা সময় ধরে ঘরের বাইরে থাকবে। তারা ভাবেন – নারীরা শুধু ঘর সংসার সামলাবে এবং সন্তান মানুষ করবে। আরো ভাবেন– আত্মীয় স্বজন, বাইরের লোকে কী বলবে! তাই দেখা যায় অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন নারী শুধুই সংসার সন্তান দেখভাল করেই জীবন কাটিয়ে দেন। সেখানে তার যোগ্যতা মূল্যহীন। এমন অনেক নারীই বলে থাকেন কাজ থেকে ফেরা মাত্রই ঘরে অশান্তি শুরু হয় – কেনো এতোক্ষণ বাইরে থাকলাম। বিভিন্ন অজুহাতে। এতে করে পরদিন সেই নারী তার কর্মক্ষেত্রে গিয়ে কাজে মন বসাতে পারেন না।
অথচ নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবারে কতোটা উপকার হয় তার প্রমাণ পাওয়া গেছে– করোনাকালীন অনেক নারী অনলাইনে খাবার, পোশাক এবং অন্যান্য বিজনেস করে সংসারের হাল ধরেছেন যখন তার স্বামীকে অফিস থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ তখন ঘরের নারী ব্যক্তিটিই পুরো সংসারের হাল ধরেছেন। স্বামীকে মানসিক সাপোর্ট দিয়েছেন। এই অর্থনৈতিক সাবলম্বীতা বা সাপোর্ট সংসারে আশীর্বাদ স্বরূপ হয়ে দেখা দিয়েছে। একজন কর্মজীবী নারী তার আয়ের চার ভাগের তিন ভাগই সংসার সন্তানের পেছনে ব্যয় করে থাকেন এবং নিজের চাহিদাটুকুর জন্য স্বামীর উপর নির্ভর করেন না।
এমনও দেখা যায় –অনেক নারী তার হাত খরচের টাকা স্বামীর কাছে না পেয়ে তার বাবা ভাইয়ের কাছে নিয়ে থাকেন কারণ অনেক স্বামী জানেনই না নারীদেরও হাত খরচ লাগে। অথচ জীবন একটাই – নারী পুরুষ সবারই শখ আহ্লাদ আছে। ছোট ছোট চাওয়া আছে। কোন কোন নারী স্বপ্ন দেখতে দেখতেই জীবনের শেষ অধ্যায়ে পৌঁছে যান তার আর ছোট ছোট চাওয়াগুলো অপূর্ণই থেকে যায়। চলুন দৃষ্টি ভঙ্গি পাল্টাই। নারীরা কাজ করতে চাইলে তাদেরকে সহযোগিতা করি। আর সহযোগিতা না করতে পারলেও অন্তত তাকে বাঁধা হয়ে না দাঁড়াই। কাজ থেকে ফিরে আসতেই অত্যাচার না করি – সে হোক মানসিক; হোক শারীরিক এবং প্রতিটি নারী পৌঁছে যাক তার স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে নিজের লক্ষে।












