প্রতিটি ওয়ার্ডে খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে : মেয়র

বাগমনিরামে পরিচ্ছন্নকর্মীদের হাজিরা নিলেন দুইজনের শারীরিক সমস্যার কথা শুনে চিকিৎসার ঘোষণা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

বর্ষাকে সামনে রেখে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, খাল খনন কর্মসূচির আওতায় কিছু কর্মসূচি নেব। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ কর্মসূচিতে আমাদের নেতৃবৃন্দ যারা আছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছি। এসময় খালনালায় ময়লাআবর্জনা না ফেলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, তিনচার মাস পর বর্ষাকাল। বৃষ্টির পানি যাতে জমতে না পারে সে লক্ষ্যে এখন থেকেই নালানর্দমা পরিষ্কার রাখতে হবে। নালার মধ্যে চিপসের প্যাকেট, পলিথিন, প্লাস্টিক, ইত্যাদি অপচনশীল ময়লাআবর্জনার কারণে নালাগুলো ভরে যায়। ফলে পানি যেতে পারে না, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, এটা আপনাদের দায়িত্ব। তিনি গতকাল রোববার সকালে নগরের ১৫নং বাগমনিরাম ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন। এসময় শুরুতে মেয়র পরিচ্ছন্নকর্মীদের হাজিরা নেন। ওয়ার্ডটিতে ১০১ জন সেবক থাকলেও গতকাল ৪ জন অনুপস্থিত ছিল।

দুই পরিচ্ছন্নকর্মীর দায়িত্ব নেন মেয়র : হাজিরা নেয়ার সময় দুই পরিচ্ছন্নকর্মীর শারীরিক সমস্যার কথা শুনে তাদের চিকিৎসা করানোর ঘোষণা দেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এরা হচ্ছেন রহিম বাদশা ও জসিম উদ্দিন। এর মধ্যে রহিমের চোখের সমস্যা রয়েছে এবং জসিম কানে কম শুনতে পান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডা. শাহাদাত আজাদীকে বলেন, রহিমের চোখে ছানি পড়েছে। জসিমের শ্রবণ শক্তি কম। তাদের চিকিৎসা করাব। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি।

এদিকে প্রত্যক্ষর্শীরা জানান, হাজিরা নেয়ার সময় রহিমের চোখের সমস্যাটি নজরে আসে মেয়রের। এসময় সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে রহিম মেয়রকে জানান, তার দুই মেয়ে। তাই বাধ্য হয়ে চোখের সমস্যা থাকলেও কাজে আসেন। কয়েক জায়গায় ডাক্তার দেখালেও অর্থ সংকটের কারণে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অপারেশনের জন্য আড়াই লাখ টাকা দরকার বলেও জানান তিনি। তখন মেয়র নিজের আঙ্গুল উঁচু করে রহিমের কাছে জানতে চান, এখানে কয়টা আঙ্গুল। তখন তিনি সঠিক উত্তর দিতে না পারায় মেয়র তার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেন। একইভাবে জসিমের কানের চিকিৎসা করানো হবে বলেও জানান মেয়র। এদিকে মেয়র চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ায় খুশি হয়েছেন জানিয়ে আজাদীকে রহিম বলেন, ১০ বছর ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছি।

যা বললেন মেয়র : পরিদর্শনকালে মেয়র ডেঙ্গু এবং কিউলেঙ মশার প্রকোপ থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে মশক নিয়ন্ত্রণে পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। তিনি পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগের মেয়রকাউন্সিলররা ইচ্ছামাফিক লোক নিয়োগ দিয়েছেন। এক ওয়ার্ডে ৭০ থেকে ৯০জন এমনকি অনেক ওয়ার্ডে ১০০ জনও আছে। আমি মনে করি প্রত্যেকে তার নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে। এর বিনিময়ে সে বেতন নিচ্ছে। আমার যেটা দায়িত্ব অবশ্যই আমি তা করবো।

মেয়র পরিচ্ছন্নকর্মীদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম যোগান দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, পরিচ্ছন্ন কাজের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, ভ্যান গাড়ি শীঘ্রই ব্যবস্থা করা হবে। জনগণের সেবক হিসেবে আমি দায়িত্ব নিয়েছি এবং তারাও আমার একটা অংশ। যাতে জনগণের কোনো দুর্ভোগ না হয়, সে ব্যাপারে নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে বলে আমি আশা করি।

মেয়র পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের হুঁশিয়ার করে বলেন, কোনো ধরনের ফাঁকিবাজি করার চেষ্টা করবেন না। যে কাজকে আপনারা রুজিরোজগার হিসেবে নিয়েছেন; সেটাকে হকহালালভাবে করার চেষ্টা করবেন। আমি মনিটরিং করছি এবং এটা চলমান থাকবে। কাজ করবেন না, অথচ বেতন নেবেন এটা হবে না। এধরনের কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে চাকুরি থাকবে না।

ডা. শাহাদাত বলেন, আমি শুনেছি যে আপনারা পরিচিত লোক দেখে দেখে স্প্রে মারেন। যারা পরিচিত তাদের বাসায় মারবেন, যারা অপরিচিত তাদের বাসায় মারবেন না এটা হতে পারে না। প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সমান। সমানভাবে সব জায়গায় মশার স্প্রে করবেন। বর্তমানে আমরা একটা ভালো মশার ওষুধ দিয়েছি মস্কুবান সলিউশন। সেটা প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদও আছে। কিন্তু ঠিকমত ওষুধের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাজ্যে হাসিনার ঘনিষ্ঠদের ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
পরবর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা ১০ ডিসেম্বর থেকে