প্রতি ওয়ার্ডে ১শ জন শীর্ষ গৃহকর খেলাপির তালিকা করার নির্দেশ

চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেয়র । কাজ নিম্নমানের হলে বিল দেব না

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৮ নভেম্বর, ২০২৪ at ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ

নগরে প্রতিটি ওয়ার্ডের শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকরখেলাপিদের তালিকা করার জন্য রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, তালিকা এক সপ্তাহের মধ্যে জমা দিন। আমি রোববার থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাব। যারা গৃহকর দেয় না তাদেরকে বকেয়া গৃহকর দিতে বলব। কেউ আর্থিক সঙ্কটে থাকলে আলাদা বিষয়। তবে কেউ গায়ের জোরে কর না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

গতকাল টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ নির্দেশনা দেন। মেয়র একই প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। এতে চসিককে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর অবকাঠামোগত সক্ষমতার সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জড়িত। এ জন্য প্রকৌশল কাজের মান বাড়াতে হবে। ঠিকাদাররা যে সব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দেব না। যে সমস্ত সড়ক ভেঙে গেছে সেগুলো সংস্কারের দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।

চসিকের আয় বাড়াতে জোর দিয়ে মেয়র বলেন, প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো থেকে সার উৎপাদন করে আয় করা যায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এজন্য সংগৃহীত বর্জ্য থেকে পচনশীল জৈব পদার্থগুলোকে আলাদা করতে হবে। এরপর সেই সংগৃহীত জৈব পদার্থ থেকে সার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া যে সমস্ত মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলোকে প্রক্রিয়া করে প্লাস্টিকের দানায় রূপান্তর করে বিক্রি করে আয় বাড়ানো সম্ভব। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের যে সমস্ত স্থাপনা থেকে আয় আসার সম্ভব সেগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্জ্যের বিন নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল যা করা প্রয়োজন করতে হবে।

বারইপাড়া খাল প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা দূর করার ক্ষেত্রে বারইপাড়া খাল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্প শেষ না হওয়ায় জনগণ খুবি কষ্টে আছে। দ্রুত এ প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। নগরীতে সড়ক আলোকায়ন বাড়াতে হবে। নগরবাসীর অন্যতম প্রধান অভিযোগ সড়কে বাতি না থাকা। সড়কে আলোকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, ব্যবহার করতে হবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি। এ সময় প্রধান প্রকৌশলীকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের নির্দেশ দেন মেয়র।

শাহাদাত বলেন, চসিকের যে সমস্ত মার্কেট আছে, হাটবাজারঘাট আছে সেগুলো থেকেও রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোনো মামলা থাকলে জানাবেন, সেগুলোও নিস্পত্তি করতে উদ্যোগ নেব। হোল্ডিং ট্যাঙ বাড়ানোর পরিবর্তে যারা কর দিচ্ছে না তাদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কর প্রদান আটোমেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের কর প্রদান সহজ করতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি মো. আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, আনোয়ার জাহান, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসিন, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের গুলিতে ১ জেলে নিহত, ১৯ জনকে অপহরণ
পরবর্তী নিবন্ধতিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন