চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় পোশাক রপ্তানি খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের সাতটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। সেগুলো হলো প্যাসিফিক জিন্স, জিন্স ২০০০, ইউনিভার্সেল জিন্স, এনএইচটি ফ্যাশন, প্যাসিফিক এক্সেসরিজ, প্যাসিফিক ওয়ার্কওয়্যার ও প্যাসিফিক অ্যাটায়ার্স। এর মধ্যে প্যাসিফিক জিন্সের ইউনিট দুটি ও ইউনিভার্সেল জিন্সের ইউনিট চারটি।
গত বৃহস্পতিবার প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর স্বাক্ষরিত পৃথক আটটি বিজ্ঞপ্তিতে কারখানা বন্ধের তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কারখানার মধ্যে কিছু শ্রমিক কাজে যোগদান না করে কারখানা ভেতরে মারামারি, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এতে কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুকূল পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কিছু শ্রমিক অবৈধভাবে কাজ বন্ধ করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। মারামারি ও ভাঙচুরে কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকেরা আহত হন এবং প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এটি অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। এ অবস্থায় শ্রম আইন অনুযায়ী, কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’
পুলিশ জানায়, শ্রম আইনের ১৩(ক) ধারা অনুযায়ী, কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী, বেআইনি ধর্মঘটের কারণে কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক চাইলে কারখানা বন্ধ করে দিতে পারবেন। যত দিন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকেরা তত দিন কোনো বেতন পাবেন না। শ্রমিকদের সংঘর্ষ ঘিরেই কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেছে। সাত কারখানায় মোট শ্রমিক ৩৫ হাজারের বেশি।
ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ৭টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার প্যাসিফিক গ্রুপের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। বর্তমানে ইপিজেড এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুসারে বেআইনি ধর্মঘটের কারণে কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলে এবং সে রকম পরিস্থিতিতে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রাখলে মালিকরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন এবং এই সময়ে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হবে না।
চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের সাতটি কারখানা বন্ধের চিঠি পেয়েছি। শ্রমিকদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে মালিকপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে।