বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলা প্যান্ডোরা পেপার্স আবার বিপুল সংখ্যক নতুন নথি প্রকাশ করেছে, যাতে বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহারকারী আট ব্যক্তির নাম এসেছে। তারা সবাই বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহার করে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে কোম্পানি নিবন্ধন করেছেন বলে বেরিয়ে এসেছে নথিতে।
বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত নামের তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা হলেন- নিহাদ কবির, মোহাম্মদ ভাই, ইসলাম মঞ্জুরুল, সাইদুল হুদা চৌধুরী, অনিতা রানী ভৌমিক, সাকিনা মিরালি, ওয়াল্টার পোলাক ও ড্যানিয়েল আর্নেস্টো আইউবাত্তি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জোট- ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) সোমবার রাতে সাত লাখ ৪০ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের এ বিশাল তালিকা প্রকাশ করে। গত ৩ অক্টোবর প্যান্ডোরা পেপারসের প্রথম নথি ফাঁসের পর দ্বিতীয় এ তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত আট জনের নাম পাওয়া গেল। এদের মধ্যে নিহাদ কবিরের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে রাজধানী ঢাকার ইন্দিরা রোড। খবর বিডিনিউজের।
ক্যাপিটাল ফেয়ার হোল্ডিং লিমিটেড নামে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে ২০০৮ সালের অগাস্টে একটি কোম্পানি নিবন্ধন নেন নিহাদ কবির। তিনি বাংলাদেশের আইনজীবী ও ব্যবসায়ী ব্যারিস্টার নিহাদ কবির কিনা জানতে কয়েকবার ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি। তালিকায় থাকা ইসলাম মঞ্জুরুল, মোহাম্মদ ভাই, সাইদুল হুদা ও সাকিনা গুলশানের এবং অনিতা রানী চকবাজারের ঠিকানা ব্যবহার করে কোম্পানি খুলেছেন।
অপরদিকে ইসলাম মঞ্জুরুল বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, ওয়াল্টার রাশিয়া ও ড্যানিয়েল আর্নেস্তো আর্জেন্টিনার ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ ভাই ১৯৩৬ হোল্ডিংস লিমিটেড, সাকিনা মুন রেকার সার্ভিসেস করপোরেশন, আনিতা আনটেরিস হোল্ডিংস লিমিটেড, মঞ্জুরুল ওরিয়েন্টাল অ্যাগ্রি কেমিক্যাল কোম্পানি, সাইদুল বেবেন ইন্টারন্যাশনাল, ওয়াল্টার ফ্লিন্ট এন্টারপ্রাইজেস এসএ ও ড্যানিয়েল কুডেল লিমিটেড নামের কোম্পানির মালিক। ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড ছাড়াও করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন দেশ ও এলাকায় অফশোর কোম্পানি হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের গড়ে তোলা কোম্পানির তথ্য ও কর ফাঁকির তথ্য প্রকাশ করেছে প্যান্ডোরা পেপার্স। পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সমপ্রতি তা জানতে চায় হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে দেশে অর্থপাচার প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চাওয়া হয়। সেজন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে উচ্চ আদালত। বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে- হাই কোর্ট তা জানতে চাওয়ায় দুদক সমপ্রতি পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা দেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা আদালতে উপস্থাপন করে। এই ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি নাম এসেছিল ‘পানামা পেপার্সে।’ আর ‘প্যারাডাইস পেপার্সে’ এসেছিল ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম।