বাজেটে পোশাক শিল্পের রপ্তানির ওপর আরোপিত ১ শতাংশ কর মওকুফসহ ৫ দফা প্রস্তাবনা জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিএমসিসিআই)। গতকাল অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ সব প্রস্তাবনা দেয়া হয়।
সিএমসিসিআই সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে পোশাক শিল্প থেকে বছরে রপ্তানি আয় হয় ৩২ বিলিয়ন ডলার। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের প্রায় ২ কোটি লোকের জীবিকা পোশাক শিল্পের উপর নির্ভরশীল। দেশের সকল ব্যাংকের প্রায় ৭৫ শতাংশ ব্যবসা বা আয় পোশাক শিল্প থেকেই। পোশাক শিল্পের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩২ লাখ একক কন্টেনার হ্যান্ডেলিং হয়। পোশাক শিল্পের রপ্তানি কন্টেনার ও আমদানিকৃত কাঁচামালের কন্টেনার ছাড়া বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং হতো ৬ লাখের মতো, আয় হতো বর্তমান আয়ের ৫ ভাগের ১ ভাগ। তাই একতরফা চার্জ বৃদ্ধি উচিত নয়।
দেশের সকল শিপিং, সিএন্ডএফ, আইসিডি ও ট্রান্সপোর্টের ৮০ শতাংশ ব্যবসা করে পোশাক শিল্পের উপর। এক কথায়, দেশের অর্থনীতি ও জিডিপির প্রধান চালিকা শক্তি হলো পোশাক শিল্প। করোনা পরবর্তী এখন বিশ্বময় অস্থির বাজার বিরাজ করছে এবং শিপিং খরচ বেড়েছে প্রায় ৫ গুণ। কাস্টমস এজেন্টগণ প্রচুর ‘বেআইনি’ অর্থ আদায় করছে। ১৯৮৬ সালে যখন ডলার মূল্য ২০ টাকা ছিল তখন কন্টেনার ভাড়া ছিল ৩ ডলার। আর বন্দরের আয় ছিল ৪০০ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে এসে ডলারের মূল্য যখন ৭০ টাকা হয় তখন কন্টেনার ভাড়া ৩শ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ ডলার করা হয়। বিভিন্ন চার্জ বৃদ্ধিতে বন্দরের আয় বৃদ্ধি পায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। বন্দর আবার চার্জ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছে। আরও বৃদ্ধি হলে রপ্তানি খরচ বৃদ্ধিতে রপ্তানি ব্যাহত হবে।
চিঠিতে প্রস্তাবনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে- যেহেতু পাশ বুক এন্ট্রি দিয়ে রপ্তানির উপকরণ যায়, রপ্তানি না হলে শুল্ক আদায় হয় তাই বন্ডে এইচএস লিস্টভুক্ত করার মত কঠিন ও অতি খরচের কাজ এবং সময় সাপেক্ষ কাজটি বাদ দেওয়া যায়। পক্ষান্তরে আমদানি নীতি মতে, ক্রেতার রপ্তানি আদেশ ও ইউডিতে উপকরণের যে এইচএস কোড থাকবে সেই মতে বা উপকরণের বর্ণনা অনুসারে কাস্টমস নিজ পছন্দ মতে এইচএস কোড দিয়ে পাশবুকে লিখে পোশাক শিল্পের উপকরণ ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়।
রেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের মত চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়া কন্টেনার পরিবহনে দেশে অন্য কোন জায়গা নাই, তাই একতরফা মনোপলি ভাবে কনসালটেন্ট দিয়ে চার্জ বৃদ্ধি না করে, এই বিষয়ে জনস্বার্থে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রদানকারী মন্ত্রণালয় ও দেশের ট্রেডবডিসমূহের সমন্বয়ে কমিটি করার জন্য যথা নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ করছি। কাস্টমস লাইসেন্সিং, বিদেশীদের ডেলিভারি এজেন্ট এবং রপ্তানিতে বিদেশীদের নমিনেটেড ফরওয়ার্ডার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান, কাস্টম নিদের্শনা এবং বন্দরের নির্দেশনা না মেনে দৈনিক কয়েক কোটি টাকা ‘বেআইনি’ অর্থ আদায় করছে। যা প্রতিরোধের জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়ে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।