চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি) প্রতিষ্ঠার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, দেশের আগামী দিনের একশ’ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তৈরি পোশাক খাতকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সহায়ক শক্তি হবে কারিগরি জ্ঞানে দক্ষ যুব সমাজ। চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি) সেই দক্ষ যুবসমাজ তৈরিতে কাজ করছে। এখানের স্নাতকেরাই আগামীতে পোশাক শিল্পে নেতৃত্ব দেবে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে যাত্রা তা আশার আলো ছড়াতে শুরু করেছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
তারা বলেন, পোশাক শিল্পে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ডিপ্লোমা কোর্স দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ২০০২ সালে। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অনার্স কলেজ হিসেবে চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি) নামে রূপান্তর হয়। ২০২২ সালে ওই ইনস্টিটিউটকে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করে দেশের রপ্তানি খাতে অবদান রাখতে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার বর্ষপূর্তি গতকাল বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে। সকালে বিজিএমইএ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজিএমইএ’র প্রথম সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বিজিএমইএ’র পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সিবিইউএফটি’র শৃংঙ্খলা কমিটির সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিবিইউএফটি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম। বক্তারা বলেন, একসময় দেশের তৈরি পোশাক খাতে প্রচুর বিদেশী বিশেষজ্ঞ দিয়ে কাজ করাতে হতো। দেশ থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা চলে যেতো। সেই প্রবণতা কমে এসেছে। এখন আমাদের তরুণেরা বহুক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। আগে বিদেশীদের দিয়ে যেসব কাজ করাতে হতো তা এখন আমাদের ছেলেমেয়েরা করছেন। এতে দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে দেশের তৈরি পোশাক খাতে এ তরুণেরা শুধু নেতৃত্বই দেবেন না, কোটি কোটি ডলার সাশ্রয়ও করবেন।
সিবিইউএফটি ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে গত ৪০ বছর ধরে আরএমজি সেক্টর উন্নত হচ্ছে। দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয় তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। তবে যেভাবে এই সেক্টরের উন্নতি হচ্ছে সে পরিমাণে এই বিষয়ের বিশেষায়িত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। এই সেক্টরে অভিজ্ঞ জনশক্তির জন্য আমারা চীন, শ্রীলংকা, ভারত ও পাকিস্তানের উপর নির্ভর করতাম। গত ২০ বছর ধরে আমরা এই সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি তৈরির চেষ্টা করছি। ডিপ্লোমা কোর্স দিয়ে শুরু করা এই প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়ে এই সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি) বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি বিভাগে অনার্স এবং একটি বিভাগে এমবিএ প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রত্যেক বিভাগে ৩৫ জন করে প্রত্যেক সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। বছরে দুটি সেমিস্টারে মোট ৩১৫ জন শিক্ষার্থী অনার্স এবং এমবিএ প্রোগ্রামে অধ্যয়ন করতে পারে।