পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা নিরসনে ভূমি বণ্টননামা কার্যকর হচ্ছে : ভূমিমন্ত্রী

পর্যটন খাতে গুরুত্ব দিতে চেম্বারের প্রতি আহ্বান মেলার স্থায়ী ভেন্যুর জন্য দুটি স্থান নিয়ে কথা হচ্ছে

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২০ মার্চ, ২০২৩ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, আমি আর সাতআট মাস পর্যন্ত মন্ত্রী আছি। এর মধ্যে ভূমি আইন ঠিক করে যেতে চাই। যেন সম্পত্তি নিয়ে আর পারিবারিক কলহ সৃষ্টি না হয়। পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা নিরসনে আমরা ভূমি বণ্টননামা কার্যকর করতে যাচ্ছি। এছাড়া ল্যান্ড ক্রাইম ডিসপোট কমানোর জন্য আমরা আইন প্রণয়নও করতে যাচ্ছি। গতকাল নগরীর আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সার্টিফিকেট ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি, মেলার জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যু। আমারও ইচ্ছা আছে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি ভেন্যুর জায়গা দেওয়ার। ইতোমধ্যে মেলার জন্য দুটি জায়গার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সাহেব আমাকে জানিয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো পোর্ট রিং রোডের টার্নিংয়ে। যেখানে ফুলের বাগান করা হয়েছে। ওটা খুব সুন্দর, আমার পছন্দ হয়েছে। আরেকটি পতেঙ্গার সিবিচ এলাকায়। এ দুটি এলাকার যে কোনো একটিতে বিশ্বমানের বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার গড়ে তোলা হবে। এরপর থেকে মেলা হবে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনে।

তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেছিল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে। কিন্তু বাংলাদেশ তা হয়নি। বাংলাদেশের অবস্থান শ্রীলঙ্কা থেকে অনেক শক্তিশালী। করোনা অতিমারি, ইউক্রেনরাশিয়া যুদ্ধ এবং ডলার সংকটের কারণে বিশ্বের বিভিন দেশে বিপর্যয় হলেও আমাদের খাদ্য উৎপাদন ঠিক থাকায় সেই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে নিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, আনোয়ারায় অর্থনৈতিক জোন, লালখান বাজার থেকে এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, চিটাগাং চেম্বার পর্যটন নিয়ে কাজ করতে পারে। চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার দিয়ে ঘুরে বায়েজিদ বাইপাস ও আউটার লিংক রোড হয়ে টানেল ঘুরে আসলে দারুণ লং ড্রাইভ হয়। এছাড়া ত্রিপুরা, আসাম এলাকাকে সম্পৃক্ত করে পর্যটনের প্যাকেজ তৈরি করেন। সমুদ্রকে প্রাধান্য দিয়ে পর্যটন প্যাকেজ করলে ওরা আকৃষ্ট হবে। কারণ ওদের ওখানে সমুদ্র নেই। এছাড়া ভারত, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড নিয়ে চট্টগ্রামের পর্যটন পরিকল্পনা সাজানোর আহ্বান করছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এম এ লতিফ বলেন, জাপানের সাথে চিটাগাং চেম্বার যে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কারিগরি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কোরিয়া, চীন ও তাইওয়ানের মতো অনেক দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে জাপান। এখন বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য একটি অন্যতম স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাপান। তাই আমাদেরকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম তথা দেশের বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে চিটাগাং চেম্বার।

অনুষ্ঠান শেষে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে জুরি বোর্ড শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন, স্টল এবং দেশীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আবুল খায়ের মিল্ক প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং কে ওয়াই টু টোন লিমিটেড। স্টলের মধ্যে বিদ্যানন্দন প্রকাশনী, ড্রেস লাইন বাংলাদেশ যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে হ্যাপি ডে ও প্রাণ ডেইরি। এছাড়া শ্রেষ্ঠ দেশীয় প্রস্তুতকারী হিসেবে শোয়েব কর্পোরেশন লিমিটেড সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। আয়োজকরা জানান, আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত মেলা চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআকতার পারভেজকে অনারারি কনসাল করে সন্তুষ্ট মালয়েশিয়া
পরবর্তী নিবন্ধডা. মঈনুল ইসলাম রোটারি গভর্নর নির্বাচিত