এবারের বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে মোটা দাগে ব্যর্থ তাসকিন আহমেদ,মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলামকে নিয়ে গড়া পেস বিভাগ। তাদের শুরুর বোলিংয়ে হতাশ চান্দিকা হাথুরুসিংহেও। দুই ম্যাচেই উইকেটের শুরুর দিকে সুবিধা কাজে লাগাতে ব্যর্থ পেসাররা। এক দিনও তারা ভাঙতে পারেননি উদ্বোধনী জুটি। আফগানদের বিপক্ষে নবম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। মঙ্গলবার ইংল্যান্ড ম্যাচেও ত্রাতা বাংলাদেশ অধিনায়ক। দাভিদ মালান, জনি বেয়ারস্টোর বিপজ্জনক হয়ে জুটি এবার তিনি থামান ষোড়শ ওভারে। এরপরও তেমন প্রভাব রাখতে পারেননি পেসাররা। শেষ দিকে বৈচিত্র্য কাজে লাগিয়ে সাফল্য পান শরিফুল। অথচ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন মুষলধারে বৃষ্টি ঝড়েছে ধারামশালায়। সকালে আবহাওয়ায় কিছুটা ঠান্ডা থাকায় উইকেটে পেসারদের জন্য ছিল বাড়তি সহায়তা। কিন্তু সেটি কাজে লাগানোর মতো যথেষ্ট ভালো বোলিং করতে পারেননি তাসকিনরা। মোস্তাফিজের কিছু ডেলিভারি ব্যাটসম্যানদের ভাবালেও সাফল্য আসেনি কোনো। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে পেসারদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নেন বাংলাদেশের প্রধান কোচও। ‘সবশেষ দুই ম্যাচে অস্বাভাবিকভাবে ছন্দহীন ছিল ফাস্ট বোলাররা। সাধারণত দিনের ম্যাচে শুরুর দিকে ফাস্ট বোলারদের জন্য (উইকেটে) কিছু না কিছু থাকে। এই ম্যাচেও শুরুতে সিম মুভমেন্ট ছিল, কিছুটা চিটচিটে, অসম গতি ছিল উইকেটে। দুই ওপেনার খেলছিল এবং মিস করছিল, টাইমিংয়ে গড়বড় হচ্ছিল। তারা কিছুটা ভাগ্যবানও ছিল। এরপর তারা সত্যিই ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরা শুরুতে কিছু উইকেট নিতে পারলে গল্পটা ভিন্ন হতে পারত। বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে ৪০ ওভারেই ২৯৮ রান করে ফেলে ইংল্যান্ড। তবে শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়ান শরিফুল। স্লোয়ার, কাটার, নাকল বল ব্যবহার করে এক ওভারে দুটিসহ ৩ শিকার ধরেন বাঁহাতি পেসার। ওই সময় তার এমন বোলিংয়ে বাহবা দিলেও সার্বিকভাবে খুশি হতে পারছেন না হাথুরুসিংহে। ‘আমরা (বোলিংয়ে) যেভাবে শুরু করেছি, কিছুটা হতাশ ছিলাম। স্টাম্প বরাবর আরও বেশি বল করতে পারতাম, বিশেষ করে প্রথম দশ ওভারে। আমরা ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বিশেষ করে শরিফুল। আমার মতে, চাপের সময় ওসব বৈচিত্র্যগুলো ব্যবহার করা খুবই সাহসী ছিল। এক পর্যায়ে মনে করেছিলাম, তারা চারশ করে ফেলবে। কিছু ইতিবাচকতা আছে। তবে আমরা ভালো বোলিং করিনি।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা অফ স্টাম্প ও এর আশপাশে বোলিং করে ব্যাটসম্যানদের ভুল শট খেলতে প্রলুব্ধ করেন বাংলাদেশের বোলাররা। ইংল্যান্ড ম্যাচেও দেখা যায় একই প্রয়াস। কিন্তু এদিন মেলেনি সাফল্য। উল্টো স্টাম্পের বাইরের বলে একের পর এক বাউন্ডারি মারেন মালান, রুটরা। এক্ষেত্রে পরিকল্পনার বাস্তবায়নে ঘাটতি ছিল বলে জানান বাংলাদেশ কোচ। ‘স্টাম্পের বাইরে বল করার পরিকল্পনা ছিল না। পরিকল্পনা ছিল স্টাম্পে বোলিং করার। আমার মতে, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এই ম্যাচে বিশেষ করে। গত ম্যাচে আমরা স্পিনারদের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াই। এই ম্যাচে যেটা হয়েছে, তাদের ভালো বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ের কারণে স্পিনাররা আমাদের ম্যাচে ফেরাতে পারেনি।’ তবে হাথুরুসিংহে জানালেন, দলে থাকা বর্তমান পেসারদের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তার। ‘দুর্ভাগ্যবশত ইবাদত এই বিশ্বকাপে আসতে পারেনি। তবে সে যদি এখানে থাকতও, আমাদের হয়তো… আমাদের আরও বিকল্প ছিল। তবে আমরা তিন ফাস্ট বোলার নিয়েছি এবং অতীতে তারা আমাদের হয়ে কাজ করে দিয়েছে। তো আমি বলব, এই দুই ম্যাচ তাদের বিবর্ণ দিন গেছে। তারা এমনিতে ভালো বোলিং করছে।’