কক্সবাজারের পেকুয়ায় হাত-পায়ের রগ কাটা অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ।
জানা যায়, আজ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম নন্দির পাড়া নুইন্না মুইন্না বিলের ধানক্ষেতের খালী জমিতে একজন নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। প্রথমে মরদেহটি ঘিরে রাখে পেকুয়া থানা পুলিশ। পরে কক্সবাজার ডিবি পুলিশের একটি ফরেনসিক ইউনিট এসে মরদেহটির বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
থানা সূত্র জানায়, নিহত ওই নারীর নাম মোহছেনা আক্তার (৩৭)। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলার বৈদ্যঘোনা এলাকার ছাবের আহমদের কন্যা ও আবু তৈয়বের স্ত্রী। তার স্বামী আবু তৈয়ব একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলেন এবং সম্প্রতি মারা গেছেন। মোহছেনা আক্তার ৩ সন্তানের জননী।
তিনি কীভাবে পেকুয়া পর্যন্ত এলেন সেটি তার পরিবার বলতে পারছে না।
তবে তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আরিফ(২০) দাবি করছেন, তার বাবা মারা যাওয়ার পর তার বাবারই বন্ধু চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ কোণাখালী আবদুল হাকিম পাড়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে রিদুয়ান নামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসীকে বিয়ে করেন তার মা। কিন্তু কোনোদিন কোনাখালী ২য় স্বামীর বাড়িতে আসেননি তার মা। সোমবার ফোন করে তার মাকে নিয়ে আসেন রিদুয়ান। পরদিনই তার মায়ের মরদেহের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারেন বলে জানান তিনি।
নিহত মোহছেনার বড় মেয়ের জামাতা কামাল উদ্দিন বলেন, “আমার শাশুড়ির এদিকে কোনো আত্মীয়স্বজন নেই কিন্তু কীভাবে এখানে পর্যন্ত এলেন সেটি বুঝতে পারছি না। তবে আমার সৎ শ্বশুর রিদুয়ানকে আমরা শতভাগ সন্দেহ করছি।”
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, নিহত ওই নারীর দুই হাত এবং দুই পায়ের রগ কাটা ছিল এবং পেটে ছুরির আঘাতে নাড়িভূড়ি বের হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ ধারণা করছে কে বা কারা ওই নারীকে অন্যত্র হত্যা করে নন্দির পাড়ার নির্জন বিলের খালী ধানক্ষেতে মরদেহটি ফেলে যায়। এসময় মরদেহের পাশে ভ্যানিটি ব্যাগ, একটি ছুরি ও নিহত নারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানায়, মরদেহ ছিল ক্ষতবিক্ষত কিন্তু যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে চারপাশে কোনো রক্ত ছিল না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় কক্সবাজার জেলার এএসপি (সার্কেল) তফিকুল আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, “ভোরে খবর পেয়েই পুলিশ আগে মরদেহটি উদ্ধারে কাজ করছে। মরদেহের আশেপাশের অবস্থা বিবেচনায় আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে হত্যাকারীরা অন্য কোথাও ওই নারীকে হত্যা করে পেকুয়া উপজেলার নন্দির পাড়ার নির্জন বিলে মরদেহটি ফেলে গিয়েছে।”