কক্সবাজারের পেকুয়ায় একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৮ ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌমুহনী এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আশেপাশের আরো ৪টি দোকান, একটি গাড়ির কাউন্টার ও ১টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৯১ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ রাত ৯ টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও চৌমুহনী এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টার দিকে চৌমুহনী স্টেশনের সানলাইন গাড়ির কাউন্টারের পাশে অবস্থিত রিয়াজ উদ্দিনের মালিকনাধীন একটি গ্যাসের সিলিন্ডার ও জ্বালানি তেলের দোকান রিয়া এন্টারপ্রাইজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, হঠাৎ করেই দোকানের ভেতরে ধাও ধাও করে আগুন জ্বলে উঠে। এ সময় আশেপাশের কয়েকজন দোকানদার ফায়ার গুইসার ছেড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন দোকানের বাইরে চলে আসে এবং আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় অন্তত ৮ ব্যক্তি গুরুতর আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে দোকনের কর্মচারী বাদশা (৪০) নামে এক ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গিয়ে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রমতে আহত ব্যক্তিরা হলেন, শফিউল (৫৫), মোরশেদ (৩৫), মুনির আহমদ (৪৫), জালাল আহমদ (৩০), আবুল হাসনাত (৪০) ও মিসবাহ উদ্দিন (২২)। এছাড়াও দমকল বাহিনীর ৩ সদস্য সামান্য আহত হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস।
পেকুয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মো. শোহাইব হোসেন মুন্সি বলেন, আমরা এখনো অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে পারিনি। ঘটনার সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। আমাদেরও ৩ কর্মী সামান্য আহত হয়েছেন। সবাইকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্বিতা চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা প্রাথমিকভাবে প্রায় ৯১ লাখ টাকার মত ক্ষয়ক্ষতির একটি পরিমাণ নির্ধারণ করেছে। দমকল বাহিনীর ৫টি ইউনিটের সহায়তায় আরো বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।
এদিকে পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, পেকুয়ার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ লাইসেন্সবিহীন পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না নিয়ে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মওজুদ করার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া কক্সবাজার জেলায় খুব শীঘ্রই এসব অবৈধ মওজুদকারী বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।