পেকুয়ার কোনো সাধারণ মানুষকে যদি প্রশ্ন করা হয়, পেকুয়ার দুঃখ কী? সোজা জবাব আসবে, সদরের পেকুয়া বাজার ও চৌমুহনী এলাকার নিত্য যানজট। দিনের বেশিরভাগ সময় পেকুয়ার এই দুই প্রধান স্টেশনে যানজট থাকে। সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনের কর্মকতা-সবাই এই যানজটের ভুক্তভোগী। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ দুর্ভোগ লাঘবে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজার ও চৌমুহনী কলেজ গেইট এলাকায় যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র। একবার যানজটের সৃষ্টি হলে তা এক ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছর পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের সড়কটি আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়। এর ফলে সড়কটি উঁচু হয়ে যায়। নিচু হয়ে পড়ে সড়কের দুই পাশ। সড়কের ধারে জায়গা না থাকায় বর্তমানে ২৪ ফুট প্রস্থের এই রাস্তাতেই অটো রিক্সা, টমটম, ছারপোকাসহ সব গাড়ি স্টেশন পেতে বসেছে। যত্রতত্র পার্কিং ও হকাররা তো রয়েছেই।
অন্যদিকে চৌমুহনী কলেজ গেইট এলাকাটি চৌরাস্তার মোড়ে হওয়ায় সহজেই যানজট তৈরি হয়। এ মোড়ের উত্তরাংশে আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর প্রতিদিন কাঁচাবাজার বসে। আছে চট্টগ্রাম-বাঁশখালীগামী অটোরিক্সার স্টেশন। পশ্চিমাংশ অর্থাৎ পেকুয়া বাজারমুখী অংশে যাত্রী ওঠানামার জন্য অটোরিক্সা, টমটমসহ বিভিন্ন গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। এছাড়া মোড়ের পূর্বাংশে সরকারি দলের লোকজনের নিয়ন্ত্রণাধীন অটোরিঙার স্টেশন, দক্ষিণাংশে ব্যাটারি চালিত রিঙার স্টেশন থাকায় যানজট তৈরি হয় সহজেই। মোড়ের অধিকাংশ জায়গা হকারদের দখলে থাকায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হয় বলে জানান স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, চট্টগ্রামগামী ৩টি পরিবহনের কাউন্টার রয়েছে কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকায়। গাড়িগুলো কাউন্টারের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে।
চৌমুহনী এলাকার ব্যবসায়ীদের সংগঠন মিতালীর সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন বলেন, তীব্র যানজট চৌমুহনী এলাকার ব্যবসায়ীদের জীবন অতীষ্ঠ করে তুলেছে। জনদুর্ভোগ যেমন হচ্ছে, তেমনি ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্যের। যানজট নিরসনে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়িক নেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের সড়কটির দুই পাশে জায়গা নেই। ফলে সব গাড়ি সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। পেকুয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি বাহাদুর শাহ বলেন, টোল তোলার জন্য সড়কের ওপর অটো রিঙার স্টেশন বসানো হয়েছে। তার অভিযোগ, পেকুয়া বাজার ও চৌমুহনীতে কৃত্রিমভাবে যানজট তৈরি করে হাজার হাজার যাত্রীদের কষ্ট দেয়া হচ্ছে।
পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
পেকুয়া ইউএনও মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, রাস্তার ওপর অবৈধ পার্কিং ও বাজার বসার ফলে পেকুয়ার প্রধান দুই স্টেশনে যানজট তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা অটোরিঙা, ব্যাটারিচালিত রিঙা ও টমটমের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। এর ফলে যানজট অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আশা করি সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া নতুন রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ শেষ হলে যানজট কমে যাবে।