পেকুয়ায় শিক্ষক আরিফ হত্যাকাণ্ডে নগরী থেকে গ্রেপ্তার ১

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১২ অক্টোবর, ২০২৪ at ৭:৫৬ অপরাহ্ণ

মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অপহরণের পর শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফকে গুম করে নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় অন্যতম হোতা রুবেল খান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার তাকে পেকুয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের পেকুয়া হতে অপহরণের শিকার হন পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. আরিফ। পরবর্তীতে অপহৃতের মোবাইল থেকে কল করে স্বজনদের নিকট ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।

ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে র‍্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও অপহৃতের স্বজনদের নিকট কল করে মুক্তিপণ দাবিকারী হিসেবে রুবেলকে শনাক্ত ও তার বিস্তারিত পরিচয় ও অবস্থানস্থল উদঘাটনে সমর্থ হয় সংস্থাটি।

পরবর্তীতে গতকাল মধ্যরাতে র‍্যাব ১৫, র‍্যাব ১১ ও র‍্যাব ৭ এর যৌথ আভিযানিক দল র‍্যাব সদরদপ্তর গোয়েন্দা শাখার সার্বিক সহযোগিতায় রুবেলকে গ্রেপ্তারের মিশনে নামে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে তারা। গ্রেপ্তারকৃত রুবেল চাঁদপুর সদর উপজেলার চরপুরচণ্ডী গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুল্লাহ খানের জ্যেষ্ঠ ছেলে।

অভিযানের অন্যতম নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন র‍্যাব ১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। তিনি জানান, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত রুবেল অন্যতম। এই রুবেলই সরাসরি অপহৃতের স্বজনদের নিকট অপহৃতের মোবাইল থেকে দফায়দফায় কল দিয়ে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

এছাড়া অপহরণের আগে প্রধান শিক্ষক মো. আরিফের গতিবিধির উপর দীর্ঘদিন যাবত নজরদারিও করেন রুবেল।

র‍্যাব কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন শামীম আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর রুবেল এই হত্যাকাণ্ড ও মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা অকপটে স্বীকার করেন। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অপরাধীকেও শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে মর্মেও জানান তিনি। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গ্রেপ্তারকৃত রুবেল আর কী কী তথ্য দিয়েছেন- জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে এ প্রসঙ্গে এখনই আর কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এ র‍্যাব কর্মকর্তা।

অপহরণের ১৪ দিনের মাথায় গতকাল শুক্রবার মো. আরিফের বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে বস্তাবন্দী গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রুবেলকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কক্সবাজারের পেকুয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে র‍্যাব।

এদিকে খুনের শিকার শিক্ষক আরিফের ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া শেষে আজ শনিবার বিকেলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। এর পর সন্ধ্যার দিকে পেকুয়া সদরের স্টেডিয়াম মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

অপরদিকে শিক্ষক আরিফ হত্যায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ও তার একাধিক ভাইয়ের বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক লুটপাট শেষে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে এসব বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে দুই বিএনপিকর্মীকে দুর্বৃত্তদের গুলি
পরবর্তী নিবন্ধসুদ কারবারির খপ্পরে পড়ে ৫০ হাজারের বিপরীতে ৩ লক্ষ টাকা দিয়েও রেহাই মিলেনি