দুই মাস আগে পৃথিবীর কক্ষপথে যোগ হয় নতুন এক গ্রহাণু, যাকে মিনি–মুন বা ছোট চাঁদ বলে ডেকেছেন অনেকেই। বেশ কিছু দিন পাশাপাশি থাকার পর অদৃশ্য হয়ে গেল পৃথিবীর ওই তথাকথিত মিনি মুন। খবর বিডিনিউজের।
২০২৪ পিটি৫ নামের গ্রহাণুটি ১১মিটার চওড়া। অগাস্টে গ্রহাণুটির সন্ধান মেলে দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রিয়াল–ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম বা অ্যাটলাস টেলিস্কোপের মাধ্যমে। সেপ্টেম্বরে ঘোড়ার খুরের আকৃতির মতো পথে আংশিকভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে গ্রহাণুটি।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা স্পষ্ট করে বলেছিল, গ্রহাণুটি কখনই পুরোপুরিভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করবে না। প্রথমবারের মতো এই গ্রহাণুটির মিনি চাঁদের মতো আচরণ শনাক্ত করেন কমপ্লুটেন্স ইউনিভার্সিটি অফ মাদ্রিদ–এর জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী ভ্রাতৃদ্বয় রাউল ও কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস।
সূর্যের শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে কাবু হয়ে সোমবার গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে দূরে সরে গেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ। ২০৫৫ সালের আগে আর দেখা যাবে না এই গ্রহাণুটিকে। মিনি–মুনের মতো ঘটনা ঘটে যখন কোনো গ্রহাণু ধীরে ধীরে পৃথিবীর কাছে এমনভাবে চলে আসে যে, সূর্যের শক্তিশালী আকর্ষণের চেয়ে এটি পৃথিবীর নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা বেশি আকৃষ্ট হয়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তথ্য বলছে, সূর্য–প্রদক্ষিণ করা গ্রহাণুটি ৩০ বছরের মধ্যে আবারও পৃথিবীর কক্ষপথে অস্থায়ী ও আংশিকভাবে যোগ হবে। পুনরায় পৃথিবীর কক্ষপথে আসার পর বর্তমান গতির দ্বিগুণেরও বেশি গতিতে চলবে গ্রহাণুটি।
বর্তমানে পৃথিবী থেকে ৩৫ লাখ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থান করছে গ্রহাণুটি। এতই ছোট, শক্তিশালী কোনো টেলিস্কোপ ছাড়া দেখতে অস্পষ্ট লাগে এটিকে। গ্রহাণুটি কয়েকশ বার পর্যবেক্ষণ করতে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছেন মার্কোস ভাতৃদ্বয়।
এদিকে নাসা জানিয়েছে, ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক–এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের মোহাভি মরুভূমিতে গোল্ডস্টোন নামের সোলার সিস্টেম রেডার অ্যান্টেনা ব্যবহার করে জানুয়ারিতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গ্রহাণুটির ওপর নজর রাখবে তারা। নাসা’র ধারণা, কম সময়ের মধ্যে আবারও ফিরে আসতে পারে গ্রহাণুটি।