ঢাকার মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে এক র্যাব সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল প্রথম প্রহরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া। মধ্যরাতে ওই ঘটনার সময় যমুনা টিভির একটি গাড়ি সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় তার দৃশ্য ধারণ করে। যমুনার প্রতিবেদনে বলা হয়, রাত সোয়া ২টার দিকে তাদের গাড়িটি মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় সেটিকে থামতে বলেন জড়ো হওয়া লোকজন। সেখানেই দেখা মেলে হ্যান্ডকাফ পরিহিত দুই ব্যক্তির। একজনের নাম শহীদুল ইসলাম, অন্যজনের রিয়াজ। সম্পর্কে তারা মামা–ভাগ্নে। খবর বিডিনিউজের।
তাদের অভিযোগ, বিমানবন্দর এলাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে যাচ্ছিলেন তারা। ফ্লাইওভারে উঠতেই তাদের গাড়ির গতিরোধ করে পেছন থেকে আসা আরেকটি গাড়ি। আরোহী চার ব্যক্তি র্যাব পরিচয়ে অস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তাদের। এক পর্যায়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে করে মারধর। সন্দেহ হওয়ায় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগীরা।
ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায় যুক্ত শহীদুল যমুনা টিভিকে বলেন, ওরা আমাদের গাড়ি থামিয়ে জানালা দিয়ে পিস্তল ধরে। গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বলে, আমরা সোনা চোরাচালানকারী। আমরা বলি, ‘আমাদের চেক করে দেখেন’। তখন আমাদের মারধর শুরু করে। বলে, ‘গুলি করে মেরে ফেলব’। তারপর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। এ সময় আমরা চিৎকার শুরু করি।
তাদের চিৎকার শুনে এক ব্যক্তি গাড়ি থামিয়ে পরিস্থিতি দেখে ৯৯৯–এ কল করেন। আর তখন সে পথ দিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন এক পুলিশ সদস্য, হট্টগোল দেখে তিনি এগিয়ে আসেন ভুক্তভোগীদের সহায়তায়।
সাকিব নামের ওই পুলিশ সদস্য বলেন, র্যাবের কোট তিনজন দুই ব্যক্তিকে ধরে মারধর করছিলেন। দুই ব্যক্তি বাঁচানোর আকুতি জানাচ্ছিলেন। পুলিশ দেখে তিনজনের একজন গাড়ির পেছনে পিস্তল রেখে রাস্তা পার হয়ে চলে যান, আরেকজন দৌড়ে পালিয়ে যান।
একজনকে ধরে ফেলে জনতা। জয় নামে ধরা পড়া ব্যক্তির দাবি, তিনি টঙ্গীতে একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন। মমিন নামের এক র্যাব সদস্যের সাথে মাদক সংক্রান্ত কিছু কাজ করতে গিয়ে তার পরিচয় হয়। পরে মমিন তাকে দিয়ে আরও কিছু কাজ করায়। ঘটনার দিন একটি অপারেশনের কথা বলে মহাখালী ফ্লাইওভারে নিয়ে আসেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই জয়ও তাদের মারধর করেছে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে যমুনা টেলিভিশনে বলা হয়েছে, পরে বনানী থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। তাদের চাবিতে হ্যান্ডকাফ থেকে মুক্তি মেলে ভুক্তভোগীদের।
গতকাল বনানী থানার ওসি জয়সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান। এদের একজন র্যাব সদস্য বলে তিনি স্বীকার করলেও বিস্তারিত আর কিছু বলতে চাননি।












