পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে পালানো ছিনতাই চক্রের মূলহোতা আরিফ গ্রেপ্তার

ডবলমুরিং থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার টার্গেট বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি-ডাকাতি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

৫১ দিন আগে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানাধীন ছিনতাইকারীদের একটি আস্তাতায় অভিযান চালালে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ছিনতাই চক্রের মূলহোতা আরিফ হোসেন ওরফে মেহেদী হাসান। অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে নগরের বারেক বিল্ডিং মোড়ের সেই কুখ্যাত ছিনতাইকারী। মেহেদী ছাড়াও তার সাথে রয়েছে মনির ও পিচ্চি জাহিদ। প্রত্যেকের নামেই একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের রয়েছে কয়েকটি ছিনতাই চক্র। এসব চক্রের সদস্য রয়েছে প্রায় অর্ধশত। নগরের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরিডাকাতিতে তাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাদের মূল আস্তানা নগরের ডবলমুরিং থানার বারিক বিল্ডিং।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া। এর আগে গতকাল ভোরে ডবলমুরিং থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরিফ হোসেন ওরফে মেহেদী হাসানকে। এসময় আসামির কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৫০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ।

পুলিশ জানিয়েছে, ৫১ দিন আগে বারিক বিল্ডিং এলাকায় ডাকাতির টাকা ভাগাভাগির খবর পেয়ে অভিযানে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের ছুরিকাঘাত করা হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই এই চক্রকে ধরতে নজরদারি বৃদ্ধি করে তারা। ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তারের পর তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে এই চক্রের আদ্যোপান্ত। চক্রের অন্যতম হোতা আরিফ হোসেন মেহেদীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও অধরা রয়ে গেছেন অন্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ কবির বলেন, নগরের বিভিন্ন এলাকায় সমপ্রতি ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সেই অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বারিক বিল্ডিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফ হাসানকে পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করি। তার আস্তানা থেকে আমরা একটি টিপ ছোরা, চায়নিজ কুড়াল, দুটি ছুরি, একটি করে গামছা ও বালিশ এবং চারটি লোহার রড জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয় ৫০ রাউন্ড কার্তুজও। তিনি বলেন, গত ১ তারিখে পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা এলাকা বড় চুরির ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে আমরা এই চক্রকে শনাক্ত করার চেষ্টা করি। তাদের বিভিন্ন জায়গা ট্র্যাক করে তাদের সহযোগীদের মধ্য থেকে রিয়াদ হোসেন বাচ্চু, জয়নাল আবেদীন, জসিম উদ্দিন, তৌহিদ রাকিব, বাদশা মিয়াকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে জানা যায়, তাদের মূলহোতা ডাকাত মেহেদী এবং মনির।

হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া বলেন, আমরা আরিফের কাছ থেকে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করেছি সেটি ডবলমুরিং থানায় বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের জমা রাখা একটি অস্ত্র। সেটি ইতালির তৈরি ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম, থানা থেকে গত ৫ আগস্ট লুট হয়েছিল। কার্তুজগুলোও থানা থেকে লুট করা। তিনি জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা আরিফকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইবো। সেই সাথে আরও অন্যান্য যে মামলা আছে, বিশেষ করে ওয়ান ব্যাংকের ডাকাতি, আগ্রাবাদস্থ ক্যাট প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি, পাঁচলাইশে ডাকাতি, এসব লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করবো।

এর আগে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বারিক বিল্ডিং এলাকায় ছিনতাইকারীদের আস্তানায় অভিযান চালাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে আহত হন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আহলাত ইবনে জামিল ও মো. নজরুল ইসলাম। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় মো. তারেক, মো. জুয়েল ও জাহেদুল ইসলাম নামের তিন ছিনতাইকারীকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি মামলা
পরবর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধকে সুসংগঠিত করেছিল : ফারুক ই আজম