বোয়ালখালীতে পুলিশ পরিচয়ে বিহারে ঢুকে তল্লাশির নামে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বড়ুয়ার টেক এলাকার প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রথমে বৌদ্ধ বিহারের মূল দরজার তালা ভেঙে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিহারের সেবক দীপক মারমাকে জিম্মি করে ডাকাতরা। তার (দীপক মারমা) মাধ্যমে বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীলপ্রিয় মহাথেরের কক্ষে গিয়ে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমারি ও সমস্ত জিনিসপত্র তছনছ করে টাকা ও মোবাইল নিয়ে নেয়। এভাবে ক্রমান্বয়ে একে একে সব কক্ষ থেকে লুটপাট করে ডাকাতরা। এ সময় ডাকাতরা বিহারের লোকজনদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমিরা থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা, আসনের ভিতরে থাকা দানবাক্সের টাকা, আইপিএস ব্যাটারি, ভান্তের মোবাইল ও দানের স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
বিহারের সেবক দীপক মারমা বলেন, আমরা চারজন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে বিহারের মূল দরজার তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। তারপর আসনের ভিতরে থাকা দানবাঙ বের করে তালা ভেঙে টাকা–পয়সা নিয়ে নেয়। এরপর তারা আমার ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে এবং আমাকে বলে তারা নাকি পুলিশের লোক। তারা সংখ্যায় চারজন অস্ত্রধারী ছিল। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। চারজনের মধ্যে তিনজন মুখোশ পড়া ছিল না তবে একজনের মুখোশ পড়া অবস্থায় ছিল। তারা আমাকে জিম্মি করে ভান্তের ঘরে নিয়ে যায় এবং বলে যে, আমি যেন ভান্তের দরজা খুলতে বলি। প্রথমে বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীলপ্রিয় মহাথের এর কক্ষে নিয়ে যাই। সেখানে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার কক্ষে থাকা আলমারি ও সমস্ত জিনিসপত্র এলোমেলো করে তল্লাশির নাম করে টাকা, মোবাইল নিয়ে নেয়।
বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীলপ্রিয় বলেন, আমার কক্ষ তছনছ করার পর অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে উপাধ্যক্ষ আনন্দ ভিক্ষুর কক্ষে যায় ডাকাতরা। একই কায়দায় দরজা খুলতে বলে উপাধ্যক্ষের। তারা উপাধ্যক্ষের কক্ষে আলমারিতে ইয়াবা আছে বলে তল্লাশি করতে থাকে। সেখানে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয় ডাকতরা। পরে ডাকাতদল যাওয়ার সময় সবাইকে একটি কক্ষে নিয়ে দরজা আটকে দিয়ে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে তারা ডাকাতি করে চলে যায়।
বোয়ালখালী থানার উপ–পরিদর্শক মো. মুসা বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর রাত দেড়টার দিকে উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড শাহ আমানত ভবনে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতি হয়েছিল। এ সময় ডাকাতের দল ৭টি বাসা থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল, চার ভরি স্বর্ণসহ মূল্যবান জিনিস পত্র নিয়ে যায়। বিশ দিনের মাথায় একই ইউনিয়নে একই সময়ে একইভাবে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুইবার ডাকাতি হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন জায়গা হলেও দুই জায়গার ডাকাতরা একই ডাকাত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।