পিতা দাবি করা যুবকের মামলায় আদালতে হাজির হননি বদি

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৫ জানুয়ারি, ২০২১ at ৭:০১ পূর্বাহ্ণ

পিতা দাবি করে ২৭ বছর বয়সী যুবকের করা মামলায় আদালতে হাজির হননি উখিয়া-টেকনাফের আলোচিত-সমালোচিত সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। গতকাল ১৪ জানুয়ারি এ মামলার ধার্য তারিখে বদির বিরুদ্ধে জারি করা সমনের চিঠি আদালতে ফেরত না আসায় শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বদির সন্তান দাবিদার, মামলার বাদী টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার মোহাম্মদ ইসহাক এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দেখতে প্রায় ‘হুবহু’ বদির মতোই চেহারার মোহাম্মদ ইসহাক নামের ওই যুবক গত ১৩ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হয়ে বদিকে পিতা দাবি করে মামলা করেন। তার পিতৃপরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি ‘পিতা-পুত্রের’ ডিএনএ টেস্টের আবেদনও জানান।
আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মূল-বিবাদী আবদুর রহমান বদিসহ বিবাদীদের ১৪ জানুয়ারি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দেয়ার আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল ধার্য তারিখে বদির বিরুদ্ধে জারি করা সমনের চিঠি আদালতে ফেরত না আসায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানান মামলার বাদী, বদির সন্তান দাবিদার মোহাম্মদ ইসহাকের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, মামলায় জারি করা সমনের চিঠি আদালতে ফেরত আসেনি। বিবাদীও আদালতে হাজিরা দেন নি। তাই শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়নি।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু সমনপত্র ফেরত আসেনি সেহেতু বিবাদী সময় পেয়েছেন। জারি করা সমনপত্র ফেরত আসার পর আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
এ মামলায় বদি ছাড়াও মূল-বিবাদী করা হয়েছে বদির চাচা টেকনাফের পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলামকে। আবদুর রহমান বদির সন্তান দাবি করে আদালতে দায়ের করা বাদীর অবেদনে বলা হয়, তার মা সুফিয়া খাতুনকে বিগত ১৯৯২ সালের ৫ এপ্রিল কালেমা পড়ে বিয়ে করেন আবদুর রহমান বদি। তাদের বিয়ে পড়ান আবদুর রহমান বদিদের পারিবারিক আবাসিক হোটেল নিরিবিলিতে ওইসময়ে কর্মরত মৌলভী আবদু সালাম। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন হোটেলের দারোয়ান এখলাছ। তার গর্ভধারিণী মায়ের কাছেই শুনেছেন তার পিতা আবদুর রহমান বদি। টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ ধুমপাড়ার বাসিন্দা আবুল বশরের মেয়ে সুফিয়া খাতুন। সেই সূত্রে বাদী মোহাম্মদ ইসহাক আবদুর রহমান বদির প্রথম ছেলে সন্তান বলে দাবি করেন। তবে বদির বাবা এজাহার মিয়া কোম্পানী এ বিয়ে মেনে নেননি। পরে ১৯৯৪ সালের ৪ এপ্রিল তার মাকে জোর করে তাদের বাড়ির মিস্ত্রী মোহাম্মদ ইসলামের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে দেন। এ বিয়েও পড়ান মৌলভী আব্দুস সালাম। মোহাম্মদ ইসলামের সঙ্গে তার মায়ের বিয়ের পাঁচ মাস পর ১৯৯৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তার জন্ম হয়। তার জন্ম নিবন্ধন সনদে পিতার নাম মোহাম্মদ ইসলাম উল্লেখ করা হয়েছে। কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে সম্মানসহ স্নাতক পাশ করেছেন ইসহাক। এখন মাস্টার্সে ভর্তির অপেক্ষায় আছেন।
ইসহাক দাবি করেন, তার পিতার নাম আবদুর রহমান বদি উল্লেখ করে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য টেকনাফ পৌরসভায় আবেদন করেছিলেন তিনি। তখন বদির চাচা মেয়রের দায়িত্বে থাকায় তাকে সনদ দেননি। পরে বাধ্য হয়ে ২০১১ সালের জুনে পিতার নাম মোহাম্মদ ইসলাম উল্লেখ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ নেন।
অবশ্য সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি অভিযোগ স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করছেন না। তাকে ইয়াবা কানেকশনের অভিযোগে গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তার স্ত্রী শাহিন চৌধুরী উখিয়া-টেকনাফের বর্তমান এমপি। তবে বর্তমান এমপি ছাড়াও তার আরো স্ত্রী থাকার অভিযোগ রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দুবার ইমপিচড হলেন ট্রাম্প
পরবর্তী নিবন্ধআগামী বছর ডিসেম্বরের মধ্যে রেল যাবে কক্সবাজার