আড়তের সামনে থেকে পিকআপ সরাতে বলা-ই ‘কাল’ হয়ে দাঁড়ায় বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে চাঁন মিয়া লেইনে শ্রমিক সর্দার মাসুদের জন্য। নির্মমভাবে খুন হতে হয় তাকে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বাকলিয়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ তথ্য দেয় পুলিশকে। গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলো আমিন হাজি রোডের মোজাহের কলোনির মো. জসিমের ছেলে সোহাগ (২২) ও প্রধান আসামি তক্তারপুল বিসমিল্লাহ কলোনির মো. আলী হোসেনের ছেলে সাইদুল (২২)। সাইদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি শুক্রবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে বাকলিয়া আমিন হাজি রোড এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত আরেক আসামি রাসেল মিয়া (২২) এখনো পলাতক।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের থেকে হত্যাকাণ্ড এবং তাদের মধ্যকার বিরোধ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে সাইদুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অপর আসামি সোহাগের দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি কোতোয়ালি জানান, প্রতিদিনের মত গত সোমবার (১৭ অক্টোবর) মাসুদ আড়তে ট্রাক থেকে পণ্য নামানোর কাজ করছিলেন। এ সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো একটি পিকআপ। কাজের ব্যাঘাত ঘটায় মাসুদ ওই পিকআপ চালক রাসেলকে তার গাড়ি সরাতে বলে। কিন্তু রাসেল তার কথা না শুনে সেখানেই গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে মাসুদ উত্তপ্ত হয়ে ওই পিকআপ চালকের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর সন্ধ্যায় সামির ট্রেডিং নামক প্রতিষ্ঠানের সামনে আসামি রাসেল মিয়া, সাদ্দাম, সোহাগসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন শ্রমিক সর্দার মো. মাসুদকে (৪০) মারধর করে। এ সময় মামলার প্রধান আসামি সাইদুল আহত মাসুদের বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে। চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ অক্টোবর সকালে মাসুদের মৃত্যু হয়।
মামলার বাদী নিহত মাসুদের ছেলে বাবলু আজাদীকে বলেন, আমার আব্বু ২২ বছর ধরে খাতুনগঞ্জে শ্রমিকের কাজ করেছেন। আমার আব্বুকে যারা খুন করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।