আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁওয়ে দেয়াং পাহাড় কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ চলছে। উপজেলা প্রশাসনের দাবি, খাস জমির সংকট হওয়ায় পাহাড় নয়, টিলা কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। এদিকে পাহাড় কাটার অভিযোগ সরেজমিনে পরিদর্শন করে গতকাল কেইপিজেড কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমতি নিয়ে জ্বালানি পাইপলাইন সঞ্চালনের জন্য ইস্টার্ন রিফাইনারি কেইপিজেডের পাহাড় কেটে পাইপলাইন নির্মাণ করছে। কেইপিজেডের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ সত্য নয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শিল্প কারখানা নির্মাণে পাহাড় কেটে আসছে কেইপিজেড। চায়না ইকোনমিক জোনের বিরুদ্ধেও শিল্প কারখানা শুরু করার আগে পাহাড় কাটার অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির ঘর নির্মাণেও হাজীগাঁও গ্রামেও পাহাড় কাটা চলছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও পাহাড় কাটা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলছেন স্থানীয়রা।
আনোয়ারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মোমিন বলেন, পাহাড় না কাটার বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গতকাল দুপুরে কোরিয়ান ইপিজেডে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করি। তিনি বলেন, অভিযানকালে জানা যায়, কেইপিজেড গতকাল পাহাড় না কাটলেও কয়েক দিন আগে পাহাড় কেটেছে। তাই কেইপিজেডকে পাহাড় কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেইপিজেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, কেইপিজেড সরকারের নির্দেশনা মেনে শিল্পায়ন করে যাচ্ছে। বর্তমানে কেইপিজেডে ২৯ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করছে। চলছে নতুন করে শিল্পায়নের কাজ। সম্প্রতি পাহাড় কাটার বিষয়ে কেইপিজেডের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। সরকারের নির্দেশনার বাইরে কেইপিজেড কখনো পাহাড় কাটেনি।
তিনি জানান, প্রকৃত ঘটনা হলো, গত বছরের ১৫ মার্চ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. ইলিয়াছ হোসেন সাক্ষরিত চিঠিতে নির্দেশক্রমে ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পের পাইপলাইন নির্মাণ কেইপিজেডের ভেতর দিয়ে স্থাপনের লক্ষ্যে পাহাড়-টিলা কর্তন বা মোছনের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দফতর নীতিগত অনুমোদন দিলে ইস্টার্ন রিফাইনারি কেইপিজেডের ভেতর দিয়ে এই পাইপলাইন স্থাপন করে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, আনোয়ারা উপজেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাস জমি না থাকায় হাজীগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির ভূমিহীনদের গৃহ নির্মাণের জন্য টিলা কেটে ঘর করা হচ্ছে। এখানে কোনো পাহাড় কাটা হচ্ছে না। তিনি বলেন, টিলার মাটি অপসারণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ সত্য নয়।