পাহাড়ে বৈসুর সুর

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা পাড়ায় আনন্দের বান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ১২ এপ্রিল, ২০২৫ at ৭:১০ পূর্বাহ্ণ

পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ত্রিপুরাদের বৈসুর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। বর্ণিল আয়োজনে শামিল হয়েছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। গতকাল শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের উদ্যোগে পৌর টাউন হল থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এর আগে টাউন হল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে ডিসপ্লে প্রদর্শন করে ত্রিপুুরা শিল্পীরা। এসময় গড়িয়া দল নৃত্য পরিবেশন করে। গড়িয়া নৃত্যের অন্যতম অনুষঙ্গ হল শিল্পীর বাঁশি। আর এ বাঁশির সুরেই যেন বাজল বৈসুর সুর।

এসময় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ির রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সংস্কৃতির মাধ্যমে ঐক্যের বন্ধন রচিত হওয়ার পাশাপাশি পাহাড়ে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে। আমরা সম্প্রীতির খাগড়াছড়ি গড়ব।

শোভাযাত্রায় অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজির হয়েছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সী মানুষ। টাউন হল থেকে শুরু

হওয়া শোভাযাত্রাটি ত্রিপুুরা কল্যাণ সংসদ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এতে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অংশ নেয় ত্রিপুরারা। দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষা শেষে নতুন বছর বরণে অংশ নিতে পেরে খুশি এ জনগোষ্ঠীর মানুষ।

শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া সুম্মিতা ত্রিপুুরা বলেন, একেবারে দোর গোড়ায় নতুন বছর। আমরা র‌্যালির মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলতে চাই। নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর জন্য এখানে আসা। দুদিন পরই আমাদের হারি বৈসু। আমরা সেদিন গঙ্গার উদ্দ্যেশে ফুল ভাসিয়ে, রিনারিসা কাপড় ভাসিয়ে আমরা গঙ্গা মায়ের কাছে আর্শীবাদ প্রার্থনা করি। যাতে আমরা সারাবছর সুখে শান্তিতে থাকতে পারি।

ত্রিপুরাদের হাজার বছরের নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা, সংগীত, নৃত্যসহ হারানো সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য এমন আয়োজন বলে জানান বাংলাদেশ ত্রিপুুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি কমল ত্রিপুরা। তিনি বলেন, বৈসু র‌্যালির মাধ্যমে আমরা জানাতে চায় যেন এদেশের সকল মানুষ সবাই যাতে শান্তি থাকে।

বৈসু উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সবাইকে প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আজকে এই বৈসু উৎসবে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইআমরা প্রকৃতিকে রক্ষা করি। পাহাড়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতে হলে পাহাড়ের প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হলে পাহাড়কে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে রেলের হাসপাতালগুলো
পরবর্তী নিবন্ধগভীর সমুদ্রে ৫ লাখ ইয়াবাসহ আটক ২১