আনোয়ারার পিএবি সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কহিনুর আকতার, তার দুই ছেলে মানিক ও মিরাজকে গতকাল আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে পটিয়া উপজেলার জিরি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। এ সময় পুরো এলাকার পরিবেশ থমথমে হয়ে যায়। কহিনুরের স্বামী মো. শফিউল আলম স্ত্রী ও দুই পুত্রকে হারিয়ে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছে। আর কহিনুরের মা জুলেহা বেগমের কান্না থামানোর কেউ নেই, পুরো পরিবারে শোক আর শোক। এ ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষের মাঝেও শোক ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু সুমাইয়া বার বার মা ও ভাইদের খুঁজছেন। সে এখনো জানে না তার মা ও দুই ভাইকে সে আর কোনো দিন দেখতে পাবে না। তারা তার জীবন থেকে চিরবিদায় নিয়েছে। সুস্থ হলে সুমাইয়া তার মা ও ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানার পর সে এত অল্প বয়সে এ শোক কিভাবে সইবে সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। তার আগে কহিনুর ও তার দুই ছেলের মৃতদেহ ময়না তদন্ত ছাড়া জিরির গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হলে সেখানে তাদের দেখে স্থানীয়রাও কান্নায় ভেঙে পড়ে। পুরো এলাকায় শোক ছড়িয়ে পড়ে।
কহিনুরের চাচাতো ভাই মনির উদ্দীন জানান, গতকাল বাদজুমা জানাজা শেষে আমার বোন ও দুই ভাগিনার দাফন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমার (দুলাভাই) কহিনুরের স্বামী ওদের দাফন করতে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ওরা তো আমার জীবন থেকে চির বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমাকে ওদের আর দুই ঘন্টা দেখতে দিন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ দৃশ্য কত বড় বেদনাদায়ক তা বুঝানো কখনো সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, সকালে যখন ওদের জন্য ৩টি কবর পাশাপাশি খোঁড়া হয়, তখন সবার চোখের পানি কেউ ধরে রাখতে পারেনি। অকালেই একটি পরিবারের স্বপ্ন মুহুর্তে বিলীন হয়ে যাবে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় পিএবি সড়কের ডাকপাড়ায় বাস–সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে কহিনুর আকতার ঘটনাস্হলে আর তার দুই ছেলে মিরাজ (২৩) ও মানিক (১৭) চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান । আহত আছে কহিনুরের শিশু কন্যা সুমাইয়া (১০)।