পালিয়ে বিয়ে করায় মেয়েকে খুন জামাইকে ফাঁসাতে মামলা

| সোমবার , ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

সাত বছর আগে টাঙ্গাইলের গৃহবধূ পারুল আক্তার হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করার কথা জানিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলছে, পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করার ক্ষোভ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে হত্যার পর নদীতে ফেলে দিয়েছিলেন তার বাবা। এরপর একাধিক মামলায় ফাঁসাতে চেয়েছিলেন মেয়ের জামাইকে। গতকাল রোববার ঢাকার ধানমণ্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, পারুলের বাবা কুদ্দুছ খাঁ (৫৮) শুক্রবার আদালতে দোষ স্বীকার করে ওই ঘটনার রোমহর্ষক জবানবন্দি দেন। এরপর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কুদ্দুছের বন্ধু মোকাদ্দেছ মণ্ডল ওরফে মোকা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায়। খবর বিডিনিউজের।

পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘটনার শুরু ২০১২ সালে। সেসময় কুদ্দুছের মেয়ে পারুল কালিহাতির একই এলাকার মো. নাছির উদ্দিন বাবুকে ভালবেসে ঢাকায় এসে বিয়ে করেন। ওই ঘটনায় পারুলের বাবা কালিহাতি থানায় জিডি করেছিলেন। দুই পরিবার মেনে না নেওয়ায় পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়ে আশুলিয়ার জামগড়ায় বসবাস শুরু করেন পারুল ও নাছির। তবে তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। সেই কথা পারুল তার বাবাকে জানিয়েছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পারুলের বাবা তাকে ভালো ছেলে দেখে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে ভালো জীবনের আশা দেখিয়েছিলেন। তিন বছর পর ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই নাছির তার নানিকে দেখতে যান। সেই সুযোগে পরদিন পারুল তার বাবার আশ্বাসে টাঙ্গাইলে চলে যান। ঘটনা জানতে পেরে নাসির তার শ্বশুর কুদ্দুছের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় জিডি করেন।

অন্যদিকে মেয়েকে নিজের বাড়িতে না নিয়ে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে বন্ধু মোকাদ্দেছের বাসায় নিয়ে যান কুদ্দুছ। এরপর মোকাদ্দেছ তাকে প্রতিষ্ঠিত করবেএমন আশ্বাস এবং স্বামী নাছিরের কাছ থেকে কিছুদিন লুকিয়ে থাকার কথা বলে তারা তিনজন জয়পুরহাটে চলে যান। পিবিআই প্রধান বলেন, পরে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় একটি নদীর পাশে রাতে নির্জন জায়গায় নিয়ে মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন বাবা। এরপর বন্ধু মোকাদ্দেছের সহযোগিতায় ওড়না ছিঁড়ে মেয়ের হাতপা বাঁধেন এবং গলায় নিজের গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মেয়েকে হত্যা করেন কুদ্দুছ। পরে লাশ নদীতে ফেলে দিয়ে টাঙ্গাইলে ফিরে যান তারা দুজন।’

মেয়ের কার্যকলাপে ‘অপমান’ বোধ থেকে রাগেক্ষোভে কুদ্দুছ তাকে হত্যা করেন বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ওই ঘটনার পর ২০১৫ সালের ৪ অগাস্ট মেয়ের জামাই নাছিরের পরিবারের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা করেন কুদ্দুছ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানবতার কল্যাণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধসাইকেল চালিয়ে হজ পালনে বের হওয়া থাই নাগরিক এখন মাগুরায়