পার্বত্য চট্টগ্রামে জিয়া বিভেদ করেছেন, শেখ হাসিনা শান্তি সম্প্রীতি গড়েছেন

কৃষক লীগের সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | রবিবার , ১২ মার্চ, ২০২৩ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িবাঙালির কনফ্লিক্ট সৃষ্টি করেছেন জিয়াউর রহমান। পাকিস্তান আমল থেকে পাহাড়িবাঙালির মধ্যে কোনো ধরনের বিদ্বেষ ছিল না। তাদের মধ্যে সম্প্রীতির অভাব ছিল না। জিয়াউর রহমান সেই সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন, ধ্বংস করেছেন। শান্তি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সৃষ্টিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে সেই সম্প্রীতির বন্ধন আবার স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন বাঙালিপাহাড়িদের মধ্যে আস্থার সংকট নেই, সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়েছে। বিচ্ছিন্ন যেসব ঘটনা, তা শুধু চাঁদাবাজির কারণে।

গতকাল দুপুরে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের গণমানুষের দল। আওয়ামী লীগের ভিত অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগকে কেউ ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবে না।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাহাড়েসমতলে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বে আয়তনের দিক দিয়ে ৯২তম ও মাথাপিছু সর্বনিম্ন কৃষিজমির দেশ হয়েও আমরা ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করে পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়তৃতীয়তে ওঠানামা, সবজিতে চতুর্থ, আলুতে সপ্তম, আম উৎপাদনে দ্বিতীয়, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম। এটি শুধুমাত্র শেখ হাসিনা এবং শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দেশের এ পরিবর্তন বিএনপির পলাতক নেতা তারেক রহমানের সহ্য হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার অন্তর জ্বলে যাচ্ছে আর মির্জা ফখরুল বকবক করছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ‘সরকারকে দড়ি ধরে টান দেওয়ার সময় এসেছে’ বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর সরকারকে দড়ি ধরে টান দিতে গিয়ে তারা নিজেরাই চিৎপটাং হয়ে গেছে। এরপর টান দিলে দড়ি ছিঁড়ে তাদের হামাগুড়ি দিতে হবে। সরকারের ভিত অনেক গভীরে প্রোথিত এবং আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, কৃষকশ্রমিকের দল, রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল। আমরা রাজপথ কাউকে ইজারা দেইনি, রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব।

কৃষক লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কৃষিপ্রীতি তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সভার প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল কৃষি ও কৃষকের জন্য ভর্তুকি প্রদান। আর জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষক ও কৃষিকে কত ভালোবাসেন, গণভবনে কৃষি উৎপাদনের কথা আপনারা টিভিতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। গণভবনে মৌমাছির চাষ করে একশ কেজি মধু হয়েছে। অন্যান্য শাকসবজি উৎপাদন হচ্ছে, ধানও হচ্ছে। সেখানে অন্য প্রধানমন্ত্রীরাও ছিলেন, খালেদা জিয়াও ছিলেন। তারা কেউ এটি করতে পারেননি।

হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই প্রধানমন্ত্রী যিনি রাত বারোটার আগে ঘুমুতে যেতে পারেন না, ফজরের আজানের আগে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন। আজানের পর ফজরের নামাজ পড়েন, কোরআন তেলাওয়াত করেন, দেশ পরিচালনা করেন, দল পরিচালনা করেন। আবার কিষাণী হিসেবেও কাজ করেন। কৃষক লীগ বিষয়ে তিনি বলেন, কৃষক লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন, যা সমগ্র দেশে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুসংগঠিত।

এর আগে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী এবং যুগ্ম সম্পাদক মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন। খাগড়াছড়ি জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক পিন্টু ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার। সম্মেলনে ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, বাসন্তি চাকমা এমপি, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আকবর আলী চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। সম্মেলনে পিন্টু ভট্টাচার্যকে সভাপতি ও খোকন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে কৃষক লীগের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধর‌্যাব পরিচয়ে বিএনপি নেতাকে হুমকি, যুবক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধছাদে ট্যাংকের পানি দেখতে গিয়ে পড়ে মৃত্যু