পারুলের সন্তানের মা হতে চেয়েছিলেন নিঃসন্তান রীমা

শিশুচোর চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

দুই লাখ ২০ হাজার টাকায় শিশু ফাহিমকে কিনে গ্রেপ্তার হলো নিঃসন্তান রীমা আক্তার (৩০)। কারণ ওই শিশুটিকে অপর এক মায়ের বুক থেকে চুরি করেছিল শিশু চোর চক্রের সদস্যরা। শিশুটির বয়স আড়াই বছর। এ ঘটনায় জড়িত চোর চক্রের তিন সদস্যকেও নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। তারা হলো নুর ইসলাম মুরাদ (২৪), মো. জুয়েল (১৯) ও মো. রাসেল (৩৭)। গত শুক্রবার বিকেলে হাটহাজারী উপজেলার ছিপাতলী এলাকায় নিঃসন্তান রীমা আক্তারের হেফাজত থেকে শিশু ফাহিমকে উদ্ধার করা হয়।

নিখোঁজের চারদিন পর বুকের ধনকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পারুল বেগম। শনিবার সকালে থানায় ফাহিমকে বারবার বুকে জড়িয়ে ধরে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন তিনি। শিশু চুরির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন পারুল বেগম।

চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম আজাদীকে জানান, মধ্যম মোহরার এ এল খান উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে বাসার অদূরে গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে ফাহিম খেলছিল। সেদিন বাসায় ছিলেন না ফাহিমের বাবা মাসুম হাওলাদার। মা পারুল বেগম ছিলেন বাসার ভেতর। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, খেলা করতে করতে একটা সময় বাসা থেকে বের হয়ে গলির মুখে চলে এসেছিল ফাহিম। সেখান থেকে নুরুল ইসলাম মুরাদ ও মো. জুয়েল তাকে কোলে তুলে নিয়ে সিএনজি টেঙিতে করে নিয়ে যায়।

এর সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করে হাটহাজারীর ছিপাতলীতে রীমা আক্তারের বাসায় শিশুটির সন্ধান পায়। পরে রীমার দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে শিশুটিকে চুরির মূল হোতা মো. হাশেম পলাতক আছে বলে জানান ওসি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল আহমেদ বলেন, হাশেমসহ চার জন মিলে চিপস খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায়। নিঃসন্তান রীমা আক্তারের সঙ্গে আগে থেকেই তাদের দুই লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি শিশু পাইয়ে দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়েছিল। রাসেলের মাধ্যমে চুরি করা শিশুটিকে হস্তান্তরের পর রীমা প্রতিশ্রুত টাকা পরিশোধ করেন। সেই টাকায় মুরাদ একটি মোটরসাইকেল কেনেন। মুরাদের হেফাজত থেকে শিশু চুরির টাকায় কেনা মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।

এসআই জালাল আরও জানান, পলাতক হাশেম এবং গ্রেপ্তারকৃত তিনজন সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তারা শিশু চুরি করে নিঃসন্তান দম্পতিদের পাশাপাশি পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে। জুয়েলের হেফাজত থেকে শিশুটিকে তুলে নেওয়ার সময় ব্যবহৃত সিএনজি টেঙিটি উদ্ধার করা হয়েছে। জুয়েলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে বিভিন্ন থানায় আরও তিনটি মামলা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বামী গ্রেপ্তার টিকটকের সূত্রে প্রেম-বিয়ে, দাম্পত্য কলহে খুন
পরবর্তী নিবন্ধকাঠমিস্ত্রি থেকে ডাকাতদলের সর্দার, আছে নিজস্ব বাহিনীও