আইপিএলের এবারের মৌসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলার কথা ছিল সাকিব আল হাসানের। কিন্তু নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত সাকিব আইপিএলকে ‘না’ বলে দিয়েছেন। এরপর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, বিসিবি শুরুতে ছাড়পত্র দেয়নি বলেই হয়তো অভিমান করেই আইপিএল ছেড়ে দিয়েছেন সাকিব। এমনকি আইপিএলে যেতে পারেননি বলে সাকিব মন খারাপ করে রেখেছেন।
আর সে কারণেই কিনা আইরিশদের বিপক্ষে টেস্টে ঠিকভাবে বোলিং করেননি সাকিব। অনেকের ধারণা ছিল তেমন। তাই প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক সত্যিটা আসলে কি? আইপিএলে যেতে না পারাতেই কি সাকিবের মন খারাপ? কেন হঠাৎ আইপিএল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন? আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এমন সব প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
আইপিএলে না যেতে পারায় মন খারাপ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন মোটেই না। অবশ্য এবারের আইপিএলে ভালো একটা সুযোগ ছিল যেহেতু বিশ্বকাপের বছর। কিন্তু যেহেতু ফ্যামেলি ইমার্জেন্সি তো ফ্যামেলি ইমার্জেন্সি। এটাকেতো মানতে হবে। এ বছর ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। তাই
সাকিব আইপিএলে যেতে চেয়েছিলেন । তবে সাকিবের কথা শুনে বোঝা গেলো, জাতীয় দলের খেলার জন্য ছাড়পত্র না দেওয়ায় অভিমান করে সরে দাঁড়াননি। বরং পারিবারিক সমস্যার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) পরের ম্যাচগুলোতে মোহামেডানের হয়ে খেলার
কথা ছিল সাকিবের। তবে সেখানেও খেলবেন কি না সেটা পরিষ্কার করে বললেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ডিপিএলে খেলবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন সময়ই বলে দেবে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ঠিকমত বল করেননি সাকিব। তা নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছে। প্রথম ইনিংসে বোলিংয়ে এসেছিলেন ৬৬তম ওভারে। করেছিলেন কেবল ৩ ওভার। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম ওভারেই চলে আসেন বোলিংয়ে। দ্বিতীয় দিন বিকেলে ৭ ওভার বোলিং করে উইকেটও নেন দুটি। কিন্তু পরদিন কেবল ৬ ওভার করেন, চার স্পেলে এসে। এর মধ্যে তিনটি স্পেলই ছিল শুধু এক ওভারের। এ বিষয়ে সাকিব বলেন আসলে এর ওরকম তো কোনো ব্যাখ্যা নেই। বোলিং কাউকে করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনার কাছে পাঁচ–ছয় রকমের অস্ত্র থাকলে সব অস্ত্র ব্যবহার করার দরকার নেই তো সবসময়। দ্বিতীয় দিনে সফল বোলার ছিলেন। ২৭ রানে আয়ারল্যান্ড চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল, তাতে বড় কৃতিত্ব ছিল সাকিবের। কিন্তু তৃতীয় দিনে ঘুরে দাঁড়ায় আইরিশরা। সারাদিনে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৫৯ রান। এমন সময় কি বোলিংয়ে আসা যেত বলে মনে হয়েছিল ? জবাবে সাকিব বলেন এটার মানে কি আমি ছাড়া বাংলাদেশ দলের বোলিং চলে না? আমাদের যথেষ্ট বোলার আছে ২০ উইকেট নেওয়ার মতো। আমার তাদের প্রতি বিশ্বাস আছে। সেটা ওরা করে দেখিয়েছে। বিশেষত এমন একটা জায়গাতে খলা হয়েছে এ ধরনের পিচে আমরা খুব বেশি খেলি না। প্রথম তিনদিন খুবই ভালো উইকেট ছিল। মিরপুরে সাধারণত তিনদিন এত ভালো উইকেট থাকে না। এমনকি আজকেও ভালো উইকেট ছিল।
তিনি বলেন, আপনার যদি বিশ উইকেট নিতে হয় তখন বোলিং অপশনটা বেশি নিতে হবে। এটার বিকল্প আসলে নেই। কম বোলিং অপশন তখনই থাকে যখন আপনি রক্ষণাত্মক মানসিকতায় থাকেন। ড্র করার চিন্তা বা কোনো রকম ব্যাটিংটা ভালো করার চিন্তা থাকে। যখন আপনি জিততে চাইবেন পাঁচ বোলার, ছয় বোলারের অপশন নিয়ে খেলবেন। বড় বড় দলগুলো এরকম অবস্থাতেই আছে। বিশেষত আপনি যদি ইংল্যান্ড–ভারতে দেখেন, তাদের পাঁচ–ছয়জন মূল বোলার। ছয়জন ব্যাটার নিয়ে তারা খেলে। ছয় বোলার তার ওপর চাপ কমায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, মিরাজও এখনও এরকম ক্যাপেবল ব্যাটার। সাত নম্বরে ব্যাট করতে পারে। ও যদি সাত নম্বরে ব্যাট করে আমাদের বোলিং অপশন আরও বেশি হবে। যেটা আমাদের দলের জন্যই ভালো। সবাই যথেষ্ট বিশ্রাম পাবে। চাপ পড়বে না। এখন তাইজুল অনেক বেশি বোলিং করছে। ভালোও করছে।
        











