পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সহায়তা দেওয়ার কথা বললেন ব্রিটিশ মন্ত্রী

| সোমবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন দেশটির ইন্দোপ্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।

গতকাল রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ক্যাথরিন ওয়েস্ট প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, এটি আপনাকে জানানো গুরুত্বপূর্ণ যে, আমরা আপনাকে সমর্থন করছি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার জন্য ঢাকার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। খবর বিডিনিউজের।

মুহাম্মদ ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, অলিগার্ক এবং আমলাদের পাচার করা অর্থ ফেরত আনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের একটি প্রতিবেদনের বরাতে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে। বৈঠকে ইউনূস দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন কমিশন ঠিক করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং পূর্ববর্তী শাসনামলের ব্যাপক ভোট কারচুপির যে চর্চা সেটি দূর করাই এই সংস্কারের লক্ষ্য। এসব সংস্কারকে সমর্থন করে জানিয়ে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, নির্বাচনি প্রক্রিয়া, বিচার বিভাগ এবং সাংবিধানিক সংস্কারের মূল দিকগুলোর ওপর প্রাণবন্ত আলোচনা দেখতে চায় ব্রিটেন। এ ক্ষেত্রে বিতর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, সেসব অঞ্চলের বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী এবং বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সেবায় যুক্তরাজ্যের ১০.৩ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান দেওয়ার কথাও জানান তিনি। ইউনূস মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার রাখাইন সম্প্রদায়ের জন্য জাতিসংঘতত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যাতে তাদের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে না হয় এবং দাতব্য সংস্থা এবং সহায়তা সংস্থাগুলো তাদেরকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও সহায়তা আরও সহজে পৌঁছে দিতে পারে।

বৈঠকে ভূরাজনৈতিক সমস্যা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ৪০ মেগাওয়াট জ্বালানি চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইউনূস বলেন, জলবিদ্যুৎ সমৃদ্ধ নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার বিদ্যুৎ গ্রিড তৈরিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, হিমালয়ের দুই দেশ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানি করতে পারলে বাংলাদেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। এজন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

বৈঠকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক বলেন, জুলাইঅগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি মেডিকেল টিম চলতি মাসে দেশে এসেছে। তারা দিনে তিনটি অস্ত্রোপচার করছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচনের আগে আহতদের সুচিকিৎসায় আলাদা কমিশন গঠনের দাবি
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬