পাকিস্তানকে হারানোর আশায় আজ মাঠে নামবেন সাকিবরা

নজরুল ইসলাম, কলকাতা থেকে | মঙ্গলবার , ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকাপ থেকে দু’দলই প্রায় আউট হয়ে গেছে। তবে পাকিস্তানের কিছুটা হলে ক্ষীণ সম্ভাবনা জিইয়ে আছে। আর বাংলাদেশ এখনো ছুটছে একটি জয়ের পেছনে। তাই দুই দলের এই ম্যাচে যোগ হয়েছে মান রক্ষার বাড়তি টেনশনও। তেমনই এক গুরুত্বপূর্ণ আবার গুরুত্বহীন এক ম্যাচে আজ কলকাতার ইডেন গার্ডেনে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। এক জয়ের পর বাংলাদেশ হেরেছে টানা পাঁচ ম্যাচ। অপরদিকে টানা দুই জয়ের পর পাকিস্তান হেরেছে টানা চার ম্যাচে। যদিও আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ লড়াই করে শেষ মুহূর্তে ১ উইকেটে হেরেছে পাকিস্তান। তাই পরের ম্যাচগুলো সবগুলোই জিততে হবে পাকিস্তানকে সেমিফোইনালে খেলতে হলে।

তাই বাংলাদেশকে যে আজ মরণ কামড় দেবে পাকিস্তান তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নেদারল্যান্ডসের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর গতকাল অনুশীলন করেছে টাইগাররা। দুপুরের এই অনুশীলনে সবকিছুই ঠিক আছে। ঠিক নেই শুধু মাঠে গিয়ে ভালো খেলার নিশ্চয়তাটা। কারণ গত টানা পাঁচ ম্যাচেও সবকিছু ঠিক ছিল। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সটা ঠিক ছিল না। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে অন্তত সেটাই করতে চায় বাংলাদেশ।

নেদারল্যান্ডের কাছে হারের পর সমালোচনার তীরে বেশি বিদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশ দল। ঘরে বাইরে এক রকম কোনঠাসা টাইগার ক্রিকেটাররা। এরই মধ্যে ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসান পাপন দলের ক্রিকেটারদের সাথে বৈঠক করেছেন। ক্রিকেটাররা তাকে বলেছেন তাদের সবকিছু ঠিক আছে শুধু মাঠের পারফরম্যান্সটা হচ্ছে না। আর তারা সেটা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কিন্তু মাঠে ঠিকঠাক মতো হচ্ছে না। কোন অনুপ্রেরণাই যেন কাজে আসছে না সাকিবদের। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষেও তাই কিছু একটা অনুপ্রেরণা হিসেবে খুঁজছে। আর সেখানে সাকিবদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে দু’দিন আগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ নারী দলের পাকিস্তান নারী দলকে হারানো। এর বাইরে সত্যিকার অর্থে অনুপ্রেরণা খোঁজার কিছুই নেই টাইগারদের। গতকাল অনুশীলনে দলের ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায়ও যেন একটা প্রভাব পড়েছে। তবে অতীতের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে নতুন করেই যেন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ।

যদিও প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো কিছুই সুখকর নয় বাংলাদেশের জন্য। দেশের মাটিতে একটি সিরিজ জয় ছাড়া আর কোন সাফল্য নেই বাংলাদেশ দলের। সর্বশেষ এশিয়া কাপের ম্যাচেও পাকিস্তানের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। তাই একেবারেই নতুন করেই সবকিছু শুরু করতে হবে এই ম্যাচে টাইগারদের। বিশ্বকাপে তামিমসাকিব দ্বন্দ্বটা যেন নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বেশ আলোচনায় এই দুজনের বৈরীতা। যদিও তামিম নেই দলে। কিন্তু তামিমের বিকল্প হিসেবে যাদের বিবেচনা করা হয়েছিল তারা সবাই ব্যর্থতার বলয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই বার বার তামিমের কথাটা আলোচনায় আসছে। এরই মধ্যে সাকিব বলেছেন তারা পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বিশ্বকাপের আসতে পারেনি। তাই বলতে হবে এই বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ অনেক বাংলাদেশের। তাই অন্তত বিশ্বকাপের শেষ দিকে এসে এসব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। যেখানে আজ আবার সামনে পাকিস্তান। অথচ এই পাকিস্তানের বিপক্ষেই নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটিও এখন কেবলই স্মৃতি হয়ে আছে। যতবারই মুখোমুখি হয়েছে দু’দল কেবলই হার বরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দু’দলের ৩৮ মোকাবেলায় টাইগারদের জয় কেবল মাত্র ৫টি। গত বিশ্বকাপের পর এবারের বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপে সবশেষ দেখা হয়েছিল বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান।

এই দুই ম্যাচেই জয় পাকিস্তানের। চার বছর পর আবার বিশ্বকাপে দেখা টাইগারদের সাথে পাকিস্তানের। আর সেটা এমন এক অবস্থায় যখন দু’দলই বিশ্বকাপে কোনঠাসা। নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। দল হিসেবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের অবস্থা যেমন একই তেমনি অধিনায়ক হিসেবে সাকিব এবং বাবর আজমের অবস্থাও যেন একই। যদিও বাবর আজমের ব্যাটে ততটা রান খরা নেই যতটা আছে সাকিবের। তারপরও বাবরকে যেন ধুয়ে ফেলছে সবাই মিলে। একই অবস্থা সাকিবেরও। যেদিকে যাচ্ছেন এই অল রাউন্ডার সেদিকেই দুয়ো ধ্বনি শুনছেন। তাই মানসিক দিক থেকেও দারুণ চাপে আছে টাইগাররা সেটা বলতেই হয়। তবে চাপ সামলানোর কায়দাও জানেন সাকিবরা।

তবে তার চাইতেও বেশি যে জিনিসটা দরকার তা হচ্ছে অন্তত একটি জয় তুলে নেওয়া। কারণ একটি জয়ই আবার চাঙা করে তুলতে পারে বাংলাদেশ দলকে। কিন্তু সেই জয়টা যে সোনার হরিণ হয়ে আছে। তাই আজ জয়টা পাওয়া যে বড্ড বেশি দরকার। আনপ্রেডিক্টিবল পাকিস্তানের বিপক্ষে হোকনা সে স্বপ্নের জয়টা। যেটা মরীচিকা হয়েই আছে বাংলাদেশের সামনে। তাই দুই বিধ্বস্ত দলের লড়াইয়ে জয় কার সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। চাপ সামলে কারা হাসবে জয়ের হাসি। সাকিব নাকি বাবর। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআপিলে ৭ জঙ্গির সাজা পাল্টে আমৃত্যু কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধঅবরোধে নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার নির্দেশ