পশ্চিমবঙ্গের বগটুই গ্রামে ‘হত্যা ও হামলার’ ঘটনায় তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের পর পাঁচ বিধায়ককে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিধানসভায় দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির সময় একে অপরকে চড় এবং কিল-ঘুষি মারেন। খবর বিডিনিউজের। এ ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ পাঁচ বিধায়ককে বহিষ্কার করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ‘বগটুই কাণ্ডে’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি বিধায়কারা। আর তখনই সংঘাত শুরু হয়। এনডিটিভির খবরে বলা হয়, গত সোমবার বীরভূমের ওই গ্রামে তৃণমূলের এক নেতাকে হত্যার ঘটনায় একাধিক বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়, রাতভর চলে বোমাবাজি। ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে দমকল বাহিনী। সহিংসতার ঘটনায় সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তব্য দাবি করেন বিজেপির বিধায়করা। সোশাল মিডিয়ায় বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালভিয়া,মুখপাত্র শেহজাদ জয়হিন্দসহ দলটির নেতাদের দেওয়া ভিডিওতে দেখা যায় এর পরই দুই পক্ষের মধ্য উত্তেজনা শুরু হয়। তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের মেঝেতে পড়ে মারামারি করতে দেখা গেছে। এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের ছাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। মারামারির সময় তৃণমূল নেতা অসিত মজুমদারের নাক ফেটে গেলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তাকে ঘুষি মারার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির আরও চার বিধায়ককে এ বছরের জন্য বহিষ্কার করেন স্পিকার। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এবং বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগগা ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, ও ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণকে বহিষ্কারের প্রস্তাব দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই প্রস্তাবে সমর্থন করে বক্তব্য দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এরপর দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ, জয়পুরের বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতোর প্রস্তাবের পক্ষে সওয়াল করেন। আনন্দবাজার প্রত্রিকার খবরে বলা হয়, এরপরই স্পিকার বিমান বন্দোপাধ্যায় ওই পাঁচ বিধায়কের বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। বোমা হামলায় গত সোমবার স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের মৃত্যুর ঘটনায় বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় নারী ও শিশুসহ একটি পরিবারের ৮ জনের ওপর হামলা হয় এবং পরে তাদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। তাছাড়া গ্রামের মোট ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছ এনডিটিভি। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সহিংসতার তদন্ত শুরুর তৃতীয় দিন সোমবার ওই গ্রামে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-সিবিআই। এদিন ২০ সদস্যের তদন্ত দল পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি পরিদর্শন করেন। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে দলটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় আমাদেরকে ঘটনার তদন্তে একটা যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সিবিআই এর অধীনে কাজ করা সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি সদস্যরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা শুরু করেছেন।