কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৫৫ শতাংশই পলিথিন। মাটি ও বালির পরিমাণ ৪৫ শতাংশ। মাটি ও বালি থেকে পলিথিনের পরিমাণ বেশি, এই তথ্য বের হয়ে এসেছে বুয়েটের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়। এতে দেখা গেছে, নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে তলদেশের ২০ ফুট গভীর পর্যন্ত পলিথিনের আস্তরণ রয়েছে। নগরীর হাট বাজার ও বাসা বাড়িসহ সর্বত্র ব্যবহৃত পলিথিনের শেষ গন্তব্য কর্ণফুলী নদী। পলিথিনে বেহাল কর্ণফুলী। এতে বাড়ছে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের ব্যয় ও সময়।
সূত্র জানায়, কর্ণফুলীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প নিয়ে দেখা দেয়া নানা সংকটের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে পলিথিনের ভয়াবহ জঞ্জালের হদিস মিলে। নদী থেকে ৪২ লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলনের জন্য ২৫৮ কোটি টাকা ‘সদরঘাট টু বাকলিয়ার চর ড্রেজিং’ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে পদে পদে নানা সংকটে পড়তে হয়। চীনের কাটার দিয়ে এক ঘন্টা কাজ করলে পরবর্তী দুই ঘন্টা ব্যয় হয় কাটার থেকে পলিথিন খুলতে। এক পর্যায়ে কাটারের পরিবর্তে গ্রেভ দিয়ে মাটি ও বালি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপরও মাটি-বালির চেয়ে বেশি পলিথিন উঠে আসে নদীর তলদেশ থেকে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পেরে বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন করে সময় ও খরচ বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা সরেজমিন বিষয়টি দেখে যান। তাঁরাও উদ্বিগ্ন হন। বিষয়টি নিয়ে প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বুয়েটের বিটিআরসি কর্ণফুলীতে নতুন করে সমীক্ষা পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, নদীর তলদেশে বালি ও মাটির চেয়ে পলিথিন বেশি। বালি ও মাটি হচ্ছে ৪৫ শতাংশ। পলিথিন ৫৫ শতাংশ। এঅবস্থায় নদী থেকে ৪২ লাখ ঘনমিটারের স্থলে ৫১ লাখ ঘনমিটার মাটি ও বালি উত্তোলন করতে হবে। ৯লাখ ঘনমিটার বাড়তি মাটি ও বালি উত্তোলন করতে প্রকল্প ব্যয় বাড়বে অন্তত একশ’ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, এ পলিথিন পরিস্কার করা শুধু কঠিন নয়, অনেক কঠিন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে চীনা কোম্পানি ই-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্প পরিচালক কমডোর মোহাম্মদ আরিফ গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানান, কর্ণফুলীর তলদেশে অবিশ্বাস্যভাবে পলিথিন জমেছে। পানির নিচে মাটি ও বালির চেয়ে পলিথিন অনেক বেশি। এতে বাড়ছে প্রকল্প ব্যয় ও সময়।