কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে পুঁজি করে সম্প্রতি চিনির দাম বৃদ্ধি করেন ব্যবসায়ীরা। গত এক সপ্তাহ আগে খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৩৯০ টাকায়। কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত চিনির মজুদ থাকার পরেও প্রতি মণে ১০০ টাকা বাড়ানো হয়। তবে সেই চিনি গত দুইদিনে আবার কমানো হয়েছে ৫০ টাকা। বাজারে চিনির সরবরাহ সংকট না থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা প্রায় সময় চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছেন এমন অভিযোগ ভোক্তাদের। অন্যদিকে বেশিরভাগ চিনি ব্যবসায়ী বিক্রয় রশিদ দেন না। তার সাদা কাগজের চিনির পরিমাণ ও দাম লিখে বিক্রি করেন। এতে কারসাজির সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রশাসনও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেন না। ফলে ভোগ্যপণ্যের বাজার বরাবরের মতো ব্যবসায়ীদের মর্জিতেই চলে।
গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪৪০ টাকায়। গত এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৩৯০ টাকায়। বর্তমানে পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ১২০ টাকায়। সেই চিনি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়।
নগরীর নাসিরবাদ রহমান নগর আবাসিক এলাকার রহমান স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম পারভেজ বলেন, আমরা প্রতি কেজি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা পাইকারী বাজার থেকে অল্প অল্প চিনি এনে বিক্রি করি। এখনকার বর্তমান পাইকারী দাম হিসেবে চিনি বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে।
খাতুনগঞ্জের এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজারে আসার আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও বিক্রি করে। যে দরে ডিও বিক্রি হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্য ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যের তুলনায় ডিও বিক্রিও হয় বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের দেশব্যাপী কোটা আন্দোলনের জেরে সংঘাত–সহিংসতার কারণে চিনি পরিবহনে সমস্যা হয়। তাই দাম বেড়েছিল। তবে এখন সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় দামও কমছে।