পর্যটকে মুখর কাপ্তাই

হোটেল-রেস্তোরাঁ আগেভাগেই বুকিং

কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই | বৃহস্পতিবার , ২ অক্টোবর, ২০২৫ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

শারদীয় দুর্গাপূজার সরকারি ২ দিন বন্ধসহ শুক্র এবং শনিবার মিলিয়ে মোট ৪ দিনের টানা ছুটিতে কাপ্তাই উপজেলার সবগুলো আবাসিক হোটেলের রুম অনেক আগেই বুকিং হয়ে গেছে। এমনকি বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরাঁয় খাবারের জন্য অনেকেই আগেভাগে বুকিং দিয়ে রেখেছেন। যারা নতুন করে কাপ্তাই ভ্রমণে আসছেন তারা কোনো রুম বুকিং পাচ্ছেন না এবং হোটেলে খাবারের জন্য সিরিয়ালও পাচ্ছেন না।

উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র প্যানোরমা জুম রেস্তোরাঁ, নিসর্গ পড হাউজ, বনশ্রী পর্যটন কর্পোরেশন, লেক প্যারাডাইস পিকনিক স্পট, লেকশোর, লেকভিউ আইল্যান্ড, রিভারভিউ পার্কসহ প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্র পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। গতকাল সকালে জুম রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা গেছে শতাধিক মোটরসাইকেলের সারি। এছাড়া প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং অনেকে টেঙি নিয়েও বেড়াতে এসেছেন। অনেকে কর্ণফুলী নদীতে নৌবিহার করে চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাই এসেছেন বলে জানা গেছে। নিসর্গ পড হাউজের ম্যানেজার মো. মাসুদ তালুকদার বলেন, তাদের ২০টি কটেজের সবগুলো প্রায় এক মাস আগে বুকিং হয়ে গেছে। তাদের রেস্টুরেন্টে একসাথে দুইশ লোকের খাবারের সুযোগ আছে। কিন্তু সেখানেও অনেকে আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছেন। একই রকম অবস্থা দেখা গেছে কাপ্তাই লেক প্যারাডাইস পিকনিক স্পটে। সেখানে অনেকে বাস নিয়েও ঘুরতে এসেছেন দেখা গেছে।

কাপ্তাই ফ্লোটিং প্যারাডাইজের ব্যবস্থাপক মো. সোহেল জানান, চলতি বছর এরকম পর্যটক কাপ্তাইয়ে আর আসেনি। বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো থাকায় পর্যটকরা স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারছেন। আমরা পর্যটকদের সামাল দিতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছি। তবে এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।

কাপ্তাই সড়কের রেশম বাগান পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্বরত অফিসার জানান, বুধবার সকাল ৭টা থেকে দলে দলে মানুষ কাপ্তাই ভ্রমণে আসছেন। বেশিরভাগ পর্যটক আসছেন মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার এবং মাইক্রোবাসে চড়ে। এমন ভিড়ের মধ্যেও কোন পর্যটক যাতে সমস্যায় না পড়েন তার জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।

কাপ্তাই লেকে ইঞ্জিন বোট চালক মো. মহিউদ্দিন জানান, অনেক পর্যটক নৌবিহারে যাচ্ছেন। তাদের সমিতিতে ২০টি বোট রয়েছে। গতকাল প্রায় সবগুলো বোট সারাদিন ভাড়ায় ছিল। প্রতিটি বোট কেউ এক ঘণ্টা, কেউ দুই ঘণ্টা, কেউ আরো বেশি সময়ের জন্য ভাড়া নিয়েছেন।

কাপ্তাই থানার ওসি মোহাম্মদ কায় কাউস বলেন, কাপ্তাই ভ্রমণ ও বিনোদনের জন্য একটি আদর্শ জায়গা। এখানে পাহাড়, নদী, লেক, সমতল সবকিছুর সমাহার রয়েছে। এছাড়া রয়েছে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ। বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসার কারণে কোথাও যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া দুর্গাপূজাকে নিরাপদ রাখতে সড়কে বিজিবির সার্বক্ষণিক টহল রয়েছে। এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন বলেন, টানা বন্ধে শুধু যে সাধারণ মানুষ কাপ্তাই বেড়াতে আসছেন তা নয়। অনেক সরকারি কর্মকর্তা সপরিবারে কাপ্তাই ভ্রমণ করতে এসেছেন। তবে অনেক সরকারি কর্মকর্তা রাত্রিযাপন করতে আগ্রহ দেখালেও কোথাও কোনো গেস্টহাউস বা মোটেল রিসোর্ট খালি না থাকায় আমরা অনেক কর্মকর্তাকে রাত্রিযাপনের সুযোগ দিতে পারিনি।

সীতাকুণ্ড থেকে বেড়াতে আসা মিনহাজুল ইসলাম দম্পতি বলেন, আমরা ৩টি মাইক্রোবাসে করে ৩৫ জন কাপ্তাই বেড়াতে এসেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের ২৭ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধ৩০ টাকায় খান এক খিলি ‘আগুন পান’