সবুজ পাহাড় ও ঝরনা দেখতে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। খাগড়াছড়িতে বছরে অন্তত এক লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে। পাহাড়, উপত্যকা, ঝিরি, অসংখ্যা ছোট বড় ঝরনা, আলুটিলা রহস্যময় গুহাসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে বৈচিত্র্যময় খাগড়াছড়ি। তবে এক দশক আগেও খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল হাতে গোনা। বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সড়ক যোগাযোগ উন্নত হওয়ায় খাগড়াছড়ি এখন পর্যটকদের অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য। আলুটিলা, রিছাং ঝরনা, তৈদুছড়া, ঝুলন্ত ব্রিজ, শিলাছড়ি, মায়াবিনী লেকসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটছে। এছাড়া খাগড়াছড়ি হয়ে পর্যটকরা দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাজেক যাচ্ছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন হওয়ায় ও পাহাড়ে সড়ক যোগাযোগ বিস্তৃত হওয়ায় খুশি ভ্রমণ পিসাসুরা। খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলায় বেড়াতে আসা পর্যটক সাফাত–উল–হক, মৌসুমী মৌ জানান, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। তবে রিছাং ঝরনা ছাড়া অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো যাতায়াতের সে রকম কোন সুবিধা নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈদুছড়া, তৈছামাসহ বিভিন্ন ঝরনার ছবি দেখলেও সেখানে যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সেখানে যাতায়াত করতে পারছি না।
খাগড়াছড়ির আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, পর্যটন অর্থনীতির বিকাশের লক্ষে খাগড়াছড়ির আলুটিলা এলাকায় বেসরকারি বিনোয়োগ বৃদ্ধি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমরা ব্যবসায়ীরা আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে প্রস্তুত আছি। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতার কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। পর্যটকদের আর্কষণ বাড়াতে ঝরনাসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির বিকাশে সর্বোচ্চ গুরত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে ঝরনা কেন্দ্রিক পর্যটন বিকাশের লক্ষে সড়ক নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য এলজিইডির নিদের্শনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের সমন্বয়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, খাগড়াছড়ির অন্যতম আর্কষণীয় পর্যটন কেন্দ্র রিছাং ঝরনায় যাতায়াত সহজ করার জন্য ইতোমধ্যে আমরা সড়ক নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এর পাশাপাশি দীঘিনালার তৈদুছড়া, তৈছাড়া ঝরনা এখনো পর্যটক বান্ধব হয়নি। সেগুলোতে যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।