কোথাও একটু শান্তি নেই? চারিদিকে খাঁ–খাঁ প্রান্তর। প্রকৃতি আজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর এই প্রকৃতির বিচারে মানব জাতি অপারাধী। কী আশ্চর্য! একটু ভাবতে অবাক লাগে! অথচ বন ও প্রকৃতি ছিল আমাদের নিকটতম এক আত্মীয়। আমরা জেনেছি, বনভূমি পৃথিবীর প্রথম আগন্তুক। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হতে পারে কিন্তু আজ তাদের জ্ঞান বুদ্ধি পৃথিবী ধ্বংসের মুখে ফেলে দিয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়– আদি মানুষ পৃথিবীতে আসার সময় সবুজে ভরা ছিল, শীতল ছায়া ছিল, ক্ষুধা নিবারণের জন্য গাছপালার উপর নির্ভর করত। কিন্তু আজ কালের পরিবর্তনে মানুষ অরণ্য ধ্বংস করে ফেলছে। নিজের সুবিধার্থে মন যা চায় তাই করছে। কোনো বাঁধা নেই! পৃথিবীতে ডেকে আনছে মরুভূমির রুক্ষতা। তাছাড়া আমরা জানি–এই অরণ্যই পারে মরুভূমিকে সবুজ–শ্যামল, স্নিগ্ধতা দান করতে। ফিরিয়ে দিতে পারে অঙিজেনের বিপুল সমারোহ। যা জীব জগতের জন্য আশির্বাদ বয়ে আনতে পারে।
তবে আধুনিক সভ্যতায় খেয়াল করলে দেখা যায়– নগর কেন্দ্রিকতা অরণ্যকে ধ্বংস করে ফেলেছে। আজকাল ইট, কাঠ, পাথরের কৃত্রিম শোভা স্থাপন করে মানবজাতির জন্য হুমকি স্বরূপ কবর রচনা করেছে। ফলে কার্বন–ডাই–অঙাইড ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া বৈজ্ঞানিক তথ্যে জানা গেছে– গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেতে পারে। আর উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার পানিতে ডুবে যেতে পারে। আজ মানুষের কর্মকাণ্ডে প্রকৃতি বিচার করছে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সবুজ বনায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের উচিৎ পরিবেশ বান্ধবে বেশি বেশি গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করতে হবে। পৃথিবীকে ভরিয়ে দিতে হবে সবুজের বিপুল সমারোহে। ঋতু পরিক্রমা থেকে আমাদের দেশে সুফলা–সুজলা, শস্য–শ্যামল ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রকৃতির সাথে শত্রুতা নয়, বরং বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। আসুন বৃক্ষকে টিকিয়ে রাখি, নতুন নতুন বৃক্ষরোপণ করি। সমাজে স্লোগান ধরি– গাছ লাগাও, পরিবেশ বাঁচাও। এসো সবুজ সমারোহে পৃথিবীকে ভরিয়ে দেই।











