পরিবেশ ধ্বংস করে বিপ্লব উদ্যানে নতুন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিপ্লব উদ্যান দোকান মালিক সমিতি। উদ্যানটি রক্ষায় উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নেরও দাবি জানান তারা।
গতকাল বুধবার দুপুরে বিপ্লব উদ্যানে মানববন্ধন করে এ দাবি জানানো হয়। আমরা আগেও মানববন্ধন করেছিলাম। সিটি কর্পোরেশন আমাদের কথা রাখেনি। এখানে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কর্পোরেশন নতুন স্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসার জায়গায় ব্যবসা করেন কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু প্রকৃতি নষ্ট করে কেন ব্যবসা? এই পার্ক চসিকের একার সম্পত্তি নয়, এটি জনগণেরও। এই পার্কের সুবিধা নগরবাসীও প্রাপ্য। নগরবাসীকে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে স্থাপনা গড়তে দেয়া হবে না।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিপ্লব উদ্যান দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির, বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কমিটির অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, নগর পরিকল্পনাবিদ তুহিন বড়ুয়া, সেফ গ্রিনের তৌহিদ আনোয়ার, স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ ইকবাল ও নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকার পক্ষে নজরুল ইসলাম এবং গ্রিন রেভ্যুলেশন এর সুজন বড়ুয়া। মানববন্ধনে বিপ্লব উদ্যান দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, নগরবাসীর কথা বিবেচনা করে মহামান্য হাইকোর্টের রায় অতিসত্ত্বর বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুন বাণিজ্যিক স্থাপনার চুক্তি বাতিলপূর্বক পার্ককে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কার্যকর হস্তক্ষেপ কমনা করছি। উদ্যান কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়, এটি নগরবাসীর। চট্টগ্রাম শহরের বুকে এমন পার্কের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু এটি এখন হুমকির মুখে পড়েছে। নতুন স্থাপনা নির্মাণের কারণে ছোট–বড় এবং কিছু প্রবীণ বৃক্ষ কাটা হয়েছে। ফলে পার্কটিকে তারা মরুউদ্যানে পরিণত করেছে। এক মাত্র সিটি কর্পোরেশনই পারে প্রকৃতির এই বিরুপ প্রভাব হতে নগরবাসীকে উদ্ধার করতে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্টস লিমিটেড ও রিফর্ম লিমিটেড নামে বেসরকারি দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে চসিক। বিপ্লব উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধনের নামে করা ২০ বছর মেয়াদি ওই চুক্তির পর উদ্যানে গড়ে তুলে ইট–কংক্রিটের অবকাঠামো। এ অবস্থায় গত ২২ আগস্ট নতুন করে চুক্তি করে চসিক। এবার অবশ্য রিফর্ম কনসোর্টিয়াম নামে কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রতিষ্ঠানটি সেখানে কাজও শুরু করেছে।
পরবর্তীতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিপ্লব উদ্যানে চলমান নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য চসিক মেয়র, সিডিএ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, সিএমপি কমিশনার এবং তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১২ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে নোটিশ দিয়েছে উদ্যানটিতে বিদ্যমান দোকানের ১২ মালিক। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপ্লব উদ্যান চত্বরে সমস্ত নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বলা হয়। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। পরবর্তীতে গত ১৬ জুলাই বিপ্লব উদ্যানে সকল ধরনের নতুন স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ করে হাইকোর্ট।