পরনিন্দার পরিবর্তে আত্মসমালোচনা

মোহাম্মদ ওয়াহিদ মিরাজ | মঙ্গলবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ

আমরা প্রায় সকলেই আড্ডাপ্রিয়। আমাদের আশে পাশে এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে, যে বা যারা দিনে একাধিকবার বন্ধু বান্ধব বা পরিচিতদের সঙ্গে আড্ডায় মিলিত হয় না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই আলোচনা বা আড্ডা শুরু করা হলেও অধিকাংশ আড্ডায় ‘পরনিন্দা’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে মূল আলোচ্যসূচী হিসেবে দীর্ঘক্ষণ টিকে থাকে। এমনও দেখা যায়, একই আড্ডাস্থল হতে বিদায় নেয়া সঙ্গীর সমালোচনা করতেও অনেক সময়ে অন্যরা কার্পণ্য করে না। এতে স্পষ্ট ভাবে বলা যায় যে, এদের মাঝে আন্তরিকতা নয়, এদের বৈশিষ্ট্যই হলো অপরের সমালোচনা করা। এমন মানুষদের উদাহরন টেনে অনেককে বলতে শোনা যায়, সমালোচনা না করলে যেন এদের পেটের ভাতও হজম হতে চায় না। আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই পরনিন্দা বা অপরের সমালোচনা করার কারণে বন্ধুত্বের স্থলে শত্রুতা গড়ে ওঠার পাশাপাশি ঝগড়া, মারামারিসহ এর চেয়েও বেশি জঘন্য ঘটনার সৃষ্টি হয়, যা সচেতন মহলের নিকট অত্যন্ত নিন্দনীয়।

আমাদের সমাজে দুষ্টু প্রকৃতির কিছু লোক আছে। এরা অন্যের মন্দ ঘটনার কথা সর্বত্র প্রচারের হীন উদ্দেশ্যে তা কোন সমালোচনাকারীর কানে পৌঁছে দেয়। অবশ্য তাকে তখন একথা যাতে কাউকে না বলে তজ্জন্য কৌশলে সতর্কও করা হয়। অথচ দেখা যায়, এই না বলা কথাটিই মুহূর্তের মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। অভিজ্ঞ মহলের বদ্ধমূল ধারণা হলো আত্মসমালোচনার কারণে এমন ঘৃণিত কাজ অনেকটা হ্রাস পেতে পারে। কারণ যে বা যারা অপরের নিন্দা করে তাদের নিজের জীবনেও সমালোচনার যোগ্য অনেক কলঙ্ক থাকে। তাই সঠিক জ্ঞানে আত্মসমালোচনা করা হলে অন্যের সমালোচনা করা কখনও করা সম্ভব হবে না। এছাড়া আত্মসমালোচনার কারণে চোখের সম্মুখে নিজের দোষত্রুটিভুলসমূহ ভেসে ওঠার ফলে নিজের সম্পর্কে সচেতন হওয়া যাবে। ফলে মন্দ কাজ হতে বিরত থাকার পাশাপাশি ভালো কাজে মনোনিবেশ করা সহজতর হবে। এতে অন্যের সমালোচনা করার কারণে নিজের যে সময়, সম্মান ইত্যাদি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পাপের বোঝা বৃদ্ধি পায় তা হতে রক্ষা পাওয়া যাবে। ফলে সমাজে একে অপরের প্রতি আন্তরিকতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকুশ
পরবর্তী নিবন্ধপ্রিয় কিছু সত্য