পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী

তারা ছিল খাওয়া পার্টি, দিয়ে যাচ্ছে শুধু আ. লীগ : শেখ হাসিনা

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ৫ জুলাই, ২০২২ at ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন উদ্বোধনের পর গতকাল সোমবার প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে সড়কপথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর পৈতৃকনিবাস পরিদর্শন করেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে মোনাজাত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ফাতেহা পাঠ করেন ও জাতির পিতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাযজ্ঞের অন্যান্য শহীদদের বিদেহী
আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন। শেখ হাসিনা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেও দোয়া করা হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর যে দলগুলো বাংলাদেশে ক্ষমতায় গেছে, তারা দেশবাসীর জন্য কোনো কাজ করেনি। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পর যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা ক্ষমতায় এসেছে ‘খাওয়া পার্টি’ হিসেবে, দেওয়ার জন্য না। আর আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে মানুষকে দিয়ে যাচ্ছে, মানুষের জন্য করে যাচ্ছে। দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা কিন্তু নিজের জন্য দল করেন নাই বা নিজের ক্ষমতার লোভে দল করা বা নিজের অর্থ সম্পদ বানানোর জন্য করেন নাই। তিনি করেছেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য। কাজেই আমার যেটুকু আছে, আমি যে একটা গরিব মানুষকে দিতে পারি, আর সে যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, এটাই তো আমার স্বার্থকতা একটা নেতা হিসেবে। আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীকে সেই আদর্শ মেনেই চলতে হবে।
তিনি বলেন, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সব আমলেই শুধু নির্যাতন। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান কোন সময়টা না? শত নির্যাতনের মধ্য দিয়েও আওয়ামী লীগ সব সময় শক্তিশালী। বিশেষ করে আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারাই কিন্তু পার্টিটাকে ধরে রাখে।
পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার এই যাত্রায় ছোট বোন শেখ রেহানাকেও আনার ইচ্ছা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ এই পদ্মা সেতু বানাতে গিয়ে আমাদের উপর যে অত্যাচার.. আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না। মিথ্যা একটা অভিযোগ এনেছিল।
আমার ছেলে-মেয়ে, রেহানার ছেলে, রেহানা থেকে শুরু করে আমার মন্ত্রী, সচিব মোশাররফ, আমাদের উপদেষ্টা মসিউর রহমান সাহেব থেকে শুরু করে এদের উপরে একেবারে জুলুম। মিথ্যা মামলা দেবে, তাদেরকে হয়রানি করবে। নিজে কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি দুর্নীতি করব কীসের জন্য, কার জন্য? নিজের দুই সন্তান এবং ছোট বোনের তিন সন্তান নিজেদের যোগ্যতায় নিজেরা জীবিকা নির্বাহ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তারা কোনোদিনই আমি আজকে চার চার বার ক্ষমতায়, কই কেউ তো আমাকে বলেনি আমায় এই চাকরি দাও, আমায় এই ব্যবসা দাও, এটা দাও, সেটা দাও। নিজেরা চাকরি করছে, নিজেরা পড়েছে, স্টুডেন্ট লোন নিয়েছে, একটা করে কাজ করেছে আবার চাকরি করছে। সেই টাকা শোধ দিচ্ছে আবার পড়েছে।
ছোট বোনকে নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রেহানাও চাকরি করে খায়। বোন প্রধানমন্ত্রী দেখে একেবারে বোনের উপর কোনো চাপ দেবে, তাও তো করে না। কোনোদিন কোনো কথা বলে না। বাসে ঝুলে ঝুলে অফিস করে। তারপর সে নিজে কাজ করে খায়। ঘরের কাজ..সে ঘর ঝাড় দেওয়া, বাথরুম ধোয়া, কাপড় ধোয়া, সব নিজের করতে হয়। রেহানা নিজেই করে সব। আমাদের এই আত্মমর্যাদা বোধটা আছে। কারও কাছে হাত পাতা, কারও মুখাপেক্ষী হওয়া না।
দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, একটা স্বাধীন দেশকে কীভাবে উন্নত করতে হবে, তার জন্য সব কাজগুলো করে দিচ্ছি। দেশের উন্নয়নে যে সমস্ত কাজ করে যাচ্ছে, সেগুলো যেন ভালো মতো হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল, এই চিন্তা করা যাবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে এখন সাড়ে ৩শ মেগাওয়াট লোডশেডিং
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড় থেকে আসছে গরু