বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্যেৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত দর্শক সারি থেকে কেউ কেউ জামিল আহমেদের পদত্যাগ ‘মানা হবে না’ বলে আওয়াজ তোলেন।
অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওতে পদত্যাগের কারণ হিসেবে জামিল আহমেদকে শিল্পকলার কাজে ‘আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ’ এর অভিযোগ তুলতে শোনা যায়। অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন বলেন, আমরা এই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করিনি। শিল্পকলা একাডেমির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়। জামিল আহমেদ অনুষ্ঠানে শিল্পকলার সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
অনুষ্ঠানে জামিল আহমেদ বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় বলেছিলাম, শিল্পকলার কাজে সচিবালয় থেকে যেন কোনো হস্তক্ষেপ না করে। আসিফ নজরুল সাহেব থাকার সময় করেননি। কিন্তু ইদানিং ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ হচ্ছে। আমি এখানে আর বিস্তারিত বললাম না। এরপর নিজের পরিকল্পনা এবং তাতে সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি এ জন্য এটা সঠিক সময় মনে করি, আর মনে হয় ভবিষ্যতে কাজ করা সম্ভব হবে না এখানে। আমার পদত্যাগপত্র আপনাদের সামনে হস্তান্তর করছি আমাদের সচিবের কাছে। এরপর প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে সেই পদত্যাগপত্র সচিবের কাছে হস্তান্তর করেন জামিল আহমেদ।
এই বিষয়ে কথা বলতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। জামিল আহমেদ ও শিল্পকলার সচিব ওয়ারেছ হোসেনকে ফোন করা হলে তারাও সাড়া দেননি। রাত ৯টায় শিল্পকলার একজন কর্মকর্তা বলেন, জামিল আহমেদ জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে বসে নাটক দেখছেন। নাটক দেখার সময় তিনি ফোন ধরেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক জামিল আহমেদকে গত ৯ সেপ্টেম্বর দুই বছরের জন্য শিল্পকলার মহাপরিচালক করে অন্তর্বর্তী সরকার। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি শিক্ষকতা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগে।