পতেঙ্গাসহ সন্নিহিত অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের পানির দুর্ভোগ লাঘবের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। গত ২৯ মে দৈনিক আজাদীর প্রথম পাতায় ‘সরকারি পানির বেসরকারি বাণিজ্য, ১১ বছর ধরে বিল পরিশোধ করেও পান না ওয়াসার পানি’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে ওয়াসার। সংবাদ প্রকাশের একদিনের মাথায় গতকাল ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফের নেতৃত্বে একটি দল পতেঙ্গা কাঠগড় এলাকায় যান। ওয়াসার প্রতিনিধিদলটি স্টিলমিল বাজারে স্থানীয় গ্রাহকদের সাথে বৈঠক করেন। তারা ওয়াসার পানি সরবরাহ এবং সংযোগ থাকার পরও পানি না পাওয়ার কারণগুলো খতিয়ে দেখেন। ওয়াসার চার সদস্যের প্রতিনিধিদলটি ওয়াসার পানি বেসরকারিভাবে বিক্রির তথ্য প্রমানও সংগ্রহ করেন। দিনের পর দিন গ্রাহকদের পানি না পাওয়ার বিষয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলেও তারা স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন। ওয়াসার পানি নিয়ে যারা বাণিজ্য করছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার ব্যাপারেও প্রতিনিধিদল আশ্বাস প্রদান করেন। তারা বলেন, যাদের ঘরে সংযোগ আছে তারা যেন নিয়মিত পানি পান তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে সমাজকর্মী ওয়াহিদ হাসান, আহমদ হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন শান্ত, মোসলেহ উদ্দীন মামুন তুলিপ, সাইফুল ইসলাম সুমন প্রমুখ উপস্থিত থেকে এলাকার মানুষের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরেন। তারা পুরো পতেঙ্গা এলাকাকে ওয়াসার পানি সরবরাহ নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তারা বলেন, উপকুলীয় এলাকা হিসেবে পতেঙ্গা, কাঠগড়, স্টিলমিল বাজারসহ সন্নিহিত অঞ্চলে লবণাক্ততার কারনে নলকূপ থেকে তোলা পানি মুখে দেয়ার সুযোগ থাকে না। ওয়াসার পানিই একমাত্র অবলম্বন স্থানীয় অন্তত লাখ তিনেক মানুষের। অথচ ওয়াসার এক ফোটা পানিও তারা পান না। এদের মধ্যে অনেকেই বছরের পর বছর ধরে ওয়াসার বিল পরিশোধ করেন। স্থানীয় একটি চক্র ওয়াসার পানির ব্যবসা করেন। ড্রামে ভর্তি করে এসব পানি পৌঁছে দেয়া হয় ঘরে ঘরে। প্রতি ড্রামের মূল্য আদায় করা হয় ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এই ব্যবসা যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য ওয়াসার গেটবাল্ব নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলেও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ স্থানীয়দের বক্তব্য ধৈর্য ধরে শুনেন এবং পানির সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন। বেলা বারোটা থেকে এক ঘন্টারও বেশি সময় এই বৈঠক চলে।