নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় নিরিবিলি আবাসিক নামে একটি হোটেলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে করেছে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। গত শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হোটেলটিতে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের দাবি– দীর্ঘদিন ধরে হোটেলটিতে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছে। বাধা দিতে গেলে শুক্রবার হোটেলের স্টাফরা ধরে স্থানীয় কয়েকজনকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে মারধরের শিকার (স্থানীয়) কয়েকজনকেই গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। আর মামলা দেয়। মামলার কারণে এলাকার সব পুরুষ বর্তমানে ঘরছাড়া।
পুলিশের ভাষ্য– শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন হোটেলটির একজন স্টাফকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরে ২০–২৫ জন গিয়ে চারতলা হোটেলটির নিচতলা থেকে চারতলা ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দেয়। টিভি, এসি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সবকিছু ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ভাঙচুরে জড়িত তিনজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে হোটেলের মালিক বাদি হয়ে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তার তিনজনসহ দশজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০–১৫ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর গতকাল আজাদীকে বলেন, হোটেলটির একজন স্টাফকে মারধরের জের ধরে এ ঘটনা। পরে স্থানীয় ২০–২৫ জন হোটেলটিতে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আইন নিজ হাতে তুলে নিয়ে ভাঙচুরে জড়িত তিনজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি। ফুটেজ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।
হোটেলটির বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, আমরা কিন্তু আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। ঘটনার দুদিন আগেও হোটেলটিতে আমরা রেইড দিই। সেখান থেকে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন নারীকে আটক করা হয়।
এদিকে, শুক্রবারের এ ঘটনায় ও আটককৃতদের ছাড়াতে গতকাল শনিবার জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় স্থানীয়দের। যাদের বেশির ভাগই নারী। পুলিশ ও হোটেলের বিরুদ্ধে তাদের বিক্ষোভ। বিক্ষোভারীদের অভিযোগ, অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হোটেল স্টাফদের হাতে যারা (স্থানীয়রা) মারধরের শিকার হয়েছেন, পুলিশ তাদেরই গ্রেপ্তার করেছে। মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এখন বাসা–বাড়িতে একজন পুরুষও নেই। সবাইকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তির পাশাপাশি হোটেলটি বন্ধের দাবিও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তবে গণমাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হোটেলের মালিক দুলাল। ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেছেন।
স্থানীয়রা অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে এমন ঘটনা দাবি করলেও ঘটনার নেপথ্যের কারণ তদন্ত সাপেক্ষ বলছেন পতেঙ্গা থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর। ওসির দাবি– মারধর ও হোটেল ভাঙচুরের পেছনের কারণ তারা খতিয়ে দেখছেন। তদন্ত পরবর্তী বিস্তারিত জানা যাবে। গতকালও এলাকা থেকে বেশ কয়জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।