শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের চরপাড়া ঘাটের কাছে মোবাইল ডিউটিতে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সংঘবদ্ধ একটি দল মারধর করে। তিনি সেখানে মাদক সেবন ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন। হামলাকারীরা তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ এবং ওয়্যারলেস সেট ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার পর পুলিশের অভিযানে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পিআর অ্যান্ড মিডিয়া) মাহমুদা বেগম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং দোষীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তদন্তের বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় কিছু যুবক নিয়মিতই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গাঁজা সেবন করে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউসুফ আলী টহলরত অবস্থায় কিছু যুবককে গাঁজা সেবন করতে দেখেন। তিনি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চায়, এবং সতর্ক করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘটনার কিছুক্ষণ পর ওই যুবকের দল আরও কিছু লোক নিয়ে ফিরে আসে। এসআই ইউসুফ যখন তার টহল গাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তারা তাকে ঘিরে ধরে এবং প্রশ্ন করে— ‘আপনি তো ভুয়া পুলিশ। আপনার আইডি কার্ড কই?’ উত্তরের অপেক্ষা না করেই তারা আকস্মিকভাবে তার ওপর আক্রমণ চালায়।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এসআই ইউসুফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছেন, ‘আমার মোবাইল, মানিব্যাগ, ওয়্যারলেস সব নিয়ে গেছে ওরা।’ তার শরীরে আঘাতের লাল দাগ দেখা যায়। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমার মানসম্মান সব শেষ।’
ভিডিওর একপর্যায়ে কিছু অচেনা যুবককে তার মোবাইলটি পকেটে ফিরিয়ে দিতে দেখা যায়। তবে বিস্তারিত জানতে এসআই ইউসুফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
এসআই ইউসুফ আলী ৩৬তম ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা। এর আগে তিনি নৌ-পুলিশে কর্মরত ছিলেন এবং ২০ ফেব্রুয়ারি তাকে পতেঙ্গা থানায় বদলি করা হয়। স্থানীয় অপরাধীচক্র সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা কম ছিল। তার সহকর্মীরা জানান, তিনি সহজ-সরল ও সৎ প্রকৃতির একজন কর্মকর্তা।