পণ্য ভাসছিল সাগরে, অথচ কায়িক পরীক্ষা হয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এমন ভয়াবহ এক জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটিত হওয়ার পর আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। বন্দরে পৌঁছার আগে কায়িক পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে পণ্য খালাসের চেষ্টা সংঘবদ্ধ চক্রের সুপরিকল্পিত জালিয়াতি বলেও সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর কাস্টমসে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
কাস্টমস সূত্র জানায়, ঢাকার আবিদা স্পোর্টস নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ফুটবলসহ তিন ধরনের খেলার সামগ্রীর ঘোষণা দিয়ে এক কন্টেনার পণ্য আমদানি করে। চালানটি গত ১০ এপ্রিল পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে। অথচ কন্টেনারবাহী জাহাজটি যখন বন্দরের বহির্নোঙরে তখন অর্থাৎ ৯ এপ্রিল কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম পণ্যটির কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন বলে রিপোর্ট প্রদান করেন। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে বন্দর এলাকার ফকিরহাটের আহনাফ ট্রেডলিংক নামের সিএন্ডএফ এজেন্ট চালানটি তড়িঘড়ি করে খালাসের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে কাস্টমস চালানটি আটকে কাগজপত্র পরীক্ষার পাশাপাশি শতভাগ কায়িক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে সাগরে থাকা অবস্থায় পণ্যের কায়িক পরীক্ষার রিপোর্টটি পাওয়া যায়।
শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে দেখা যায় ফুটবলসহ তিন ধরনের খেলার সামগ্রীর ঘোষণা দেয়া হলেও মূলত কন্টেনার ভর্তি করে চীন থেকে কসমেটিকস এবং অন্যান্য আরো সাত ধরনের পণ্য আনা হয়েছে। চালানটিতে শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয় ১৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মিথ্যা ঘোষণার জন্য জরিমানা করে ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ফকিরহাটের যেই ঠিকানা ব্যবহার করে আহনাফ ট্রেড লিংক নামের সিএন্ডএফ এজেন্ট চালানটি খালাস করছিল, সেই ঠিকানায় এই নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
কাস্টমসের সহকারী কমিশনার সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।