পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম–ঢাকা মহাসড়ক নিরাপদ বলে আশ্বস্ত করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বন্দরের কার্যক্রম ও চট্টগ্রাম–ঢাকা মহাসড়ক সচলের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্টরা পণ্য পরিবহনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলেন। এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম–ঢাকা মহাসড়ক নিরাপদ বলে পরিবহন মালিকদের এ আশ্বস্ত করেন। জেলা প্রশাসক বলেছেন, কারফিউ চলাকালীনও নির্বিঘ্নে সড়ক হয়ে পণ্য নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছা যাবে। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত। দ্রুত সর্বস্তরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।
গতকাল বুধবার নগরীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোরশেদ খান, বিভিন্ন পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং বিজিবি, সেনাবাহিনী, সিএমপি, জেলা পুলিশ, নৌ বাহিনী, কোস্ট গার্ড, এনএসআই, ডিজিএফআইর প্রতিনিধিবৃন্দ।
জেলা প্রশাসক বলেন, মহাসড়কে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে সমন্বয় সেল গঠন করা হবে। পণ্য পরিবহনের ড্রাইভারদের জন্য মহাসড়কে সীমিত আকারে খাবার হোটেল চালু রাখার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। পণ্য পরিবহন সমিতির প্রতিনিধিরা ড্রাইভারসহ পণ্য পরিবনের সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের কারফিউকালীন চলাচলের ব্যাপারটি উল্লেখ করলে জেলা প্রশাসক তাদের পরিচয়পত্র কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্সকে কারফিউ পাস হিসেবে বিবেচনা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেন। একই সাথে যানবাহনের প্রাথমিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে শ্রমিক এবং ড্রাইভারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন থাকার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ তার বক্তব্যে বলেন, গত পাঁচ দিনে দেশের ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছে। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান পুড়ানো হয়েছে। শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে ভবিষ্যতে নাশকতা, অরাজকতা হলে কিভাবে তা মোকাবেলা করা হবে, কিভাবে ব্যবসার ক্ষতি এড়ানো যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।
পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির একজন প্রতিনিধি বলেন, ২০১৩, ১৪ সালের জ্বালাও পোড়াও আর গত কয়েকদিনে দেশে যা ঘটছে তার সবকিছুই একই সূত্রে গাঁথা। তখন যেমন সর্বস্তরে স্থবিরতা নেমে এসেছিল, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার কারণেও চারিদিকে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কিন্তু প্রশাসন বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। পরিবহন নেতারা আরো বলেন, আমাদের শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য কারফিউ চলাকালীনও যাতে পণ্য পরিবহনে নিরাপত্তা থাকে সেটাই আমাদের চাওয়া।
জেলা পুলিশের প্রতিনিধি বলেন, সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করা হবে। শুরু থেকে আমরা সতর্ক ছিলাম। পণ্য পরিবহনে কোনো বাধা নেই। আমরা জেলা পুলিশ সর্বদা নিয়োজিত আছি। সমস্যা দেখা দিলে আমাদের জানাবেন। আমাদের কন্ট্রোলরুম নং ০১৩২০১০৮৩৯৮।
সভায় উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান নিরাপত্তা নিশ্চিতে একাধিক ট্রাককে একসাথে কনভয় আকারে চলাচল করার পরামর্শ দেন। একই সাথে তিনি যেকোনো প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন কন্ট্রোলরুমে (০২–৪১৩৬০৬০৪) যোগাযোগের ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।